মহামারীতে বিপর্যস্ত ভারত জুলাই ও আগস্ট মাসে তিনগুণ বাড়িয়ে কোভিড- ১৯ টিকার দৈনিক উৎপাদন এক কোটি ডোজ করার পরিকল্পনা করেছে। গণটিকাদানে ধীরগতি ও টিকার ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। দেশটিতে বর্তমানে প্রতিদিন ৩০ লাখেরও কম ডোজ টিকা উৎপাদন হয়।
খবর বিডিনিউজের।
এপ্রিলে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর কয়েকদিন ধরে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসছে। সংক্রমণ বেড়ে মে মাসের প্রথমদিকে একদিনে চার লাখ ১৪ হাজারেরও বেশি শনাক্তের মধ্য দিয়ে সব দেশের রেকর্ডও ছাড়িয়েছিল দেশটি।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে শনাক্ত রোগী ধীরে ধীরে কমে একদিন আগে দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা দেড় লাখের নিচে আসে, ৯ এপ্রিলের পর যা একদিনে সবচেয়ে কম। এদিন মৃত্যুর সংখ্যাও তিন হাজারের নিচে নেমে আসে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহামারীর নতুন ঢেউ ঠেকাতে হলে বিশ্বের তৃতীয় জনসংখ্যাবহুল এই দেশটির একশ ৩০ কোটি মানুষের সবাইকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের উপদেষ্টা ভি কে পাল সাংবাদিকদের বলেন, সরবরাহ বাড়ার পর আমরা নিঃসন্দেহে গণটিকাদানের গতিও বাড়াতে পারব।
চাহিদা নিয়ে চাপের মধ্যে উৎপাদন বাড়াতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটিতে থাকা টিকা উৎপাদন কোম্পানি সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া এবং ভারত বায়োটেক। যে কারণে ওষুধ কোম্পানি ফাইজারসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গেও আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ভারতে ২৮ লাখ ডোজ টিকা দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির সাড়ে চার কোটি মানুষকে টিকার দুটি ডোজই দেওয়া হয়েছে। যা প্রাপ্তবয়স্ক ৯৫ কোটি মানুষের ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদন কোম্পানি সেরাম ইনস্টিটিউট অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ড টিকা উৎপাদন করলেও গণটিকাদানের ধীর গতির কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
বেশ কটি রাজ্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ঘাটতির অভিযোগ করেছে। তাছাড়া ভারতীয় কোম্পানি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিনের ঘাটতির কথাও জানিয়েছে একটি রাজ্য। গত মাসে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দুই ডোজের ব্যবধান বাড়িয়ে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের পরিবর্তে ১২ থেকে ১৬ সপ্তাহ করার ঘোষণা দেয় সরকার। সরবরাহের ঘাটতির কারণেই এমনটা করা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সরকারের উপদেষ্টা ভি কে পাল জানান, মানুষকে আলাদা দুটি টিকার ডোজ মিশিয়ে দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই। অবশ্য এর আগে সরকারি কর্মকর্তারা তেমনটাই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি জানান, সবাইকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পূর্ণ দুটি ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং তা কমিয়ে যেন এক ডোজ করা না হয়।