টিকাদান বাড়বে লকডাউন চলবে

৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা এনআইডি কার্ড নিয়ে গেলেই হবে

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ২৮ জুলাই, ২০২১ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

টিকাদান বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে সরকার। সেই সঙ্গে লকডাউন চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে কোভিড-১৯ প্রতিরোধকল্পে আরোপিত বিধিনিষেধের কার্যক্রম পর্যালোচনা ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধক টিকা প্রদান কার্যক্রম জোরদারকরণ বিষয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে কোভিড টিকাদান শুরু হবে। মহামারীর দেড় বছরের মধ্যে দেশ যখন সবচেয়ে বিপর্যয়কর অবস্থায়, লকডাউন দিয়েও যখন সংক্রমণ ও মৃত্যু কমানো যাচ্ছে না, তখন করণীয় কী ঠিক করতে এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্বকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের বলেন, টিকা দেওয়ার বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকেও টিকা দেওয়া হবে। ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকা দেওয়া হবে। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাংবাদিকদের বলেন, ৫০ এর বেশি যাদের বয়স, সেসব রোগী হাসপাতালে বেশি এবং তারা টিকাও নেননি। এই বয়সীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
কোভিড নিয়ন্ত্রণে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে গণটিকাদান শুরু হলেও তা এখনও শহরকেন্দ্রিক। কিন্তু সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ গ্রামেও পরিস্থিতি নাজুক করে তুলেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, টিকা কার্যক্রম জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। এনআইডি কার্ড নিয়ে যে যাবেন, তাকেই টিকা দেওয়া হবে।
যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তাদের ‘বিশেষ ব্যবস্থায়’ কোভিড টিকা দেওয়া হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন। জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে টিকা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করব। যে টিকা আছে তা দিয়েই শুরু করব।
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য গত বছরের শেষ দিকে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ। সেই টিকার প্রথম চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে গণটিকাদান শুরু হয়। কিন্তু দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে সংকটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর চীন থেকে টিকা কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। চীনের উপহার হিসেবে পাঠানো এবং কেনা টিকা মিলিয়ে মোট ৫১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা বাংলাদেশ হাতে পেয়েছে। এর বাইরে কোভ্যাঙ থেকে ৬ কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। এর মধ্যে ফাইজার-বায়োএনকেটের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা এবং মডার্নার তৈরি ৫৫ লাখ ডোজ ইতোমধ্যে দেশে এসেছে।
সোয়া কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার পরও সরকারের হাতে বর্তমানে ১ কোটি ডোজের বেশি টিকা রয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সমপ্রতি বলেন, আগামী মাসের মধ্যেই আরও ২ কোটি ডোজ টিকা দেশে চলে আসবে। আগামী বছরে ২১ কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে।
লকডাউন চলবে : সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে যে লকডাউন চলছে, তা শিথিল হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, চলমান লকডাউন চলবেই। শিল্পপতিরা যে অনুরোধ করেছেন, তা গ্রহণ করতে পারছি না।
মাঠের চিত্রে লকডাউন অনেকটাই ঢিলেঢালা হয়ে পড়েছে। তা জানানো হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে বলা হয়েছে। চলমান লকডাউন ৫ আগস্ট পর্যন্ত। এর তা বাড়ানো হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আলোচনা হয়নি।
এনআইডি কার্ড নিয়ে গেলেই টিকা : ইউনিয়ন পরিষদের টিকাদান কেন্দ্রে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) নিয়ে গেলেই টিকা দিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, টিকা আরও বেশি হাতে এলে তখন আমরা আরও নিচে যেতে পারব। অর্থাৎ ওয়ার্ড পর্যায়ে চিন্তা ভাবনায় রেখেছি।
১৮ বছর হলে টিকা পাবেন সম্মুখযোদ্ধাদের স্বজনরা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মহামারি ঠেকাতে সম্মুখসারিতে কাজ করা পেশাজীবীদের পরিবারের ১৮ বছরের বেশি বয়সী সদস্যরা করোনার টিকা পাবেন। ফ্রন্টলাইনে যারা কাজ করছেন, তাদের সব সময়ই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ে গতি
পরবর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে রোহিঙ্গাসহ ৮ জনের মৃত্যু