চট্টগ্রামের নতুন পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। নদীর তলদেশে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল হিসেবে এই টানেলে নজর দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের। ২৮ অক্টোবর সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেল উদ্বোধন করেন। পরদিন সকাল থেকে টানেল সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। কিন্তু বিএনপির অবরোধসহ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে অনেকেই টানেল দেখতে যাওয়ার সাহস করেননি। কেউ কেউ গভীর রাতে টানেল দর্শন করেছেন। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সকাল থেকে টানেল দেখতে ভিড় লেগে যায়। ভোর থেকে শত শত গাড়ি পতেঙ্গা প্রান্তে গিয়ে জড়ো হয়। এই সময় টানেলে প্রবেশের সিরিয়াল রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশসহ শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা কর্মচারীদের হিমশিম খেতে হয়। শত শত গাড়ি সিরিয়াল ধরে টানেলে প্রবেশ করে। এসব গাড়ি আনোয়ারা প্রান্তে গিয়ে টোল পরিশোধ করে আবার টানেলের ভিতর দিয়ে ফিরতি পথ ধরে। এসময় যানজটেরও সৃষ্টি হয়।
অনেকেই বন্ধুবান্ধব নিয়ে টানেল দেখতে গিয়েছেন। অনেকেই গাড়ি নিয়ে হাজির হয়েছেন পরিবার পরিজন নিয়ে। বিশেষ করে বিকেল ৫ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তীব্র যানজটে স্থবির হয়ে যায় টানেলের পতেঙ্গার প্রবেশমুখ। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের বেগ পেতে হয়। গতকাল সকাল থেকে রাত অব্দি দশ হাজারের মতো গাড়ি টানেলে যাতায়াত করেছে। এই সময়ে টোল আদায় হয়েছে অন্তত সাড়ে একুশ লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, টানেলের প্রতি শুধু চট্টগ্রামেরই নয়, সারাদেশের মানুষের তীব্র আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে।
কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী স্বাধীন পরিবহনের একজন সুপারভাইজার জানান, কক্সবাজার থেকে টিকেট কেনার সময় যাত্রীরা টানেলের ভিতর দিয়ে আসার শর্ত দিচ্ছে। প্রয়োজনে বাড়তি টাকা দিতেও রাজী অনেকে। মানুষের আগ্রহে আমাদেরকেও টানেল হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
খুলশী ক্লাব লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ সামশুল আলম গতকাল সকালে ক্লাবের ৪০ জনের মতো সদস্য নিয়ে টানেল দেখতে যান। উচ্ছ্বসিত সামশুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেলের ব্যবহার দিন দিন বাড়বে। এটি চট্টগ্রামের মর্যাদাকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। এই টানেল আমাদের শুধু যোগাযোগেই নয়, পর্যটন, শিল্পায়ন এবং আবাসনেও অনন্য ভূমিকা রাখবে।