টানা ভারী বর্ষণে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বাসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে মাইকিং করছে প্রশাসন।
কাপ্তাই : কাপ্তাই প্রতিনিধি জানান, সেখানে গত তিনদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ফলে পাহাড় ধসসহ নানা ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কাপ্তাইয়ে ৫ ইউনিয়নে শতাধিক পরিবার চরম ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের ঢালে বসবাস করছেন। এদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য প্রতিদিন মাইকিং করা হচ্ছে। কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুনতাসির জাহান বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। সার্বিক পরিস্থিতি সামাল দিতে আজ (রবিবার) বিশেষ আইন-শৃঙ্খলা এবং দুর্যোগ মোকাবেলা কমিটির জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। এই সভায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সকল ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এগুলো হলো কাপ্তাই উচ্চবিদ্যালয়, বিএফআইডিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শীলছড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ওয়াগ্গা উচ্চবিদ্যালয়, ওয়াগ্গা ইউনিয়ন পরিষদ, চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন পরিষদ, খ্রিস্টিয়ান হাসপাতাল, চিৎমরম উচ্চ বিদ্যালয়, চিৎমরম ইউনিয়ন পরিষদ, রিফিউজিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগর পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাল্লুকিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি।

বাঁশখালী : বাঁশখালী প্রতিনিধি জানান, উপজেলার আওতাধীন পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে যাওয়ার জন্য প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে মানুষের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বাঁশখালী প্রশাসন তৎপর হয়। উল্লেখ্য, বাঁশখালীর পুর্বাঞ্চল পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর, সরলের পাইরাং, বৈলছড়ি,পৌরসভার জলদী, শীলকুপ, চাম্বল, পুইছড়ি এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ পাহাড়ে বসতি স্থাপন করে বসতি স্থাপন করে আসছে।
লোহাগাড়া : লোহাগাড়া প্রতিনিধি জানান, লোহাগাড়ায় পাহাড় ধ্বসের শঙ্কায় সচেতনতামূলক মাইকিং করেছে উপজেলা প্রশাসন। রোববার সকালে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাবার জন্য বলা হয়েছে। জানা যায়, উপজেলা চুনতি, পুটিবিলা, কলাউজান, চরম্বা ও বড়হাতিয়া ইউনিয়ন পাহাড় ধ্বসের শঙ্কা বেশি।
লামা : লামা প্রতিনিধি জানান, টানা বর্ষণের কারণে পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যা ও পাহাড় ধ্বসের আশংকায় শংকিত হয়ে পড়েছে লামার কয়েক হাজার মানুষ। অব্যাহত বর্ষণের ফলে পাহাড়ের উপরি ভাগের মাটি নরম হয়ে ফাটল ধরায় ধীরে ধীরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠছে। তবে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হলেও নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে বেশিরভাগই অন্যত্র সরে যাচ্ছেন না। এদিকে, দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ করতে রোববার বিকালে জরুরি বৈঠক করেছে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি।












