টাইফয়েড টিকাদান সেপ্টেম্বর নয়, ১২ অক্টোবর থেকে শুরু

| রবিবার , ১৭ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ

সারাদেশে শিশুকিশোরদের টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। আগামী ১ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে এ কর্মসূচি শুরু হবে ১২ অক্টোবর থেকে। সারাদেশে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুকিশোর এ টিকা পাবে।

গতকাল শনিবার সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির ব্যবস্থাপক আবুল ফজল মো. শাহাবুদ্দিন খান এ তথ্য দিয়ে বলেছেন, স্বাস্থ্য সহকারীদের আন্দোলন চলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে দেরি হয়েছে। তাই টিকাদান কর্মসূচি পিছিয়ে নতুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য সহকারীদের আন্দোলন এখন থেমেছে, এ কারণে টিকাদানের নতুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা রোববার সবাইকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেব। এটা ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হবে। সব মিলিয়ে ১৮ কর্মদিবস টিকাদান কর্মসূচি চলবে। প্রথম ১০ কর্মদিবস বিভিন্ন বিদ্যালয়ে, পরের আট কর্মদিবস টিকাদান কেন্দ্রে দেওয়া হবে এই টিকা। আর সব নিয়ম আগের মতোই।

এই টিকাদান কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশু ও কিশোরকিশোরী টাইফয়েডের টিকা পাবে। বিনামূল্যের এই টিকা পেতে এরইমধ্যে অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হয়েছে।

সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির ব্যবস্থাপক শাহাবুদ্দিন খান বলেন, টাইফয়েডের এই টিকা দেওয়া হবে দুই ধাপে। প্রথম ধাপে বিদ্যালয় ভিত্তিক ক্যাম্পে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে, যারা বিদ্যালয় ক্যাম্পে টিকা নিতে পারেনি, তারা পরবর্তীতে ইপিআইয়ের টিকাদান কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবে। স্কুল এবং আমাদের সারাদেশের টিকাদান কেন্দ্রে দেওয়া হবে এই টিকা। এক ডোজের ইনজেকশনে দেওয়া হবে এই টিকা, যা ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে।

গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স এই টিকা সরবরাহ করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, টিকাগুলো কেনা হয়েছে ভারত থেকে। এরইমধ্যে সব টিকা চলে এসেছে। এই টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না, টিকা দেওয়ার আগে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ হবে কি না জানতে চাইলে শাহাবুদ্দিন খান বলেন, টিকাগুলো কেনে গ্যাভি, তাদের সুবিধামত দেশ থেকে কিনে দেয়। টিকাগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী তৈরি করে দেয়। এটা শতভাগ পরীক্ষিত টিকা। আমাদের উপমহাদেশের নেপাল, পাকিস্তান ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশে এই টিকাদান শুরু হয়েছে।

সালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে টাইফয়েড আক্রান্ত হয়। এই ব্যাকটেরিয়া দূষিত খাবার বা পানি থেকে ছড়ায়।

নিবন্ধন যেভাবে : টাইফয়েডের টিকাদানের জন্য ১ আগস্ট থেকে অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হয়েছে। াধীবঢ়র.মড়া.নফ/ৎবমরংঃৎধঃরড়হ/ঃপা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজন হবে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন সনদ। এরপর নারী না পুরুষ সেই ঘরটি পূরণ করতে হবে। একটি ক্যাপচা কোড পূরণের মাধ্যমে আবেদনকারীর সব তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে পরের ধাপে যাওয়া যাবে। এই অংশে গিয়ে আবেদনকারী বা পিতামাতার মোবাইল নম্বর, মেইল, পাসপোর্ট নম্বর, বর্তমান ঠিকানার ঘর পূরণ করতে হবে সাবমিট করতে হবে। সাবমিট করার পর মোবাইল ফোনে আসা একটি ওটিপি দেওয়ার মাধ্যমে নিবন্ধনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শেষ হবে।

দ্বিতীয় ধাপে টাইফয়েড অথবা মেনিনজাইটিস এই দুটির একটি সিলেক্ট করতে হবে। টাইফয়েড অংশে ক্লিক করলে দুটি অপশন আসবেশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নবম শ্রেণি ও সমমান পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থী অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশু। এখান থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অপশনে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম, পুরো ঠিকানা, কোন শ্রেণিতে অধ্যয়নরত তা পূরণ করতে হবে। এরপর সাবমিট করলে টিকাদান কেন্দ্রের তথ্য আসবে। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী সকল শিশুএই অপশনে গিয়ে টিকাদান কেন্দ্র বাছাইয়ের পর সাবমিট করতে হবে। এরপর ভ্যাকসিন কার্ড আসবে। সেখানে ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। এই কার্ড নিয়ে নির্ধারিত দিনে টিকাদান কেন্দ্রে যেতে হবে। টিকা দেওয়ার পর অনলাইনেই পাওয়া যাবে টাইফয়েড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট।

জন্ম নিবন্ধন সনদ না থাকলেও বাবামায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে নিবন্ধন করা যাবে। এ ক্ষেত্রে লিখিতভাবে টিকার তথ্য দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহাটহাজারীতে বাইক দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধপিতা আওয়ামী লীগ পুত্র ছাত্রলীগ, দুজনেই গ্রেপ্তার