টঙ্গীতে ব্যাগে আট টুকরা লাশ : স্ত্রীকে কটূক্তি করায় যুবককে হত্যা

তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয় জঙ্গল সলিমপুর থেকে

| সোমবার , ১১ আগস্ট, ২০২৫ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

গাজীপুরের টঙ্গীতে স্ত্রীকে নিয়ে ‘কটূক্তি’ করায় যুবককে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ আট টুকরা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব। পরে ব্যাগে করে টুকরা লাশ একাধিক স্থানে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। গতকাল রোববার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাব১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান। এ ঘটনায় গত শনিবার বিকাল পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। খবর বিডিনিউজের।

এর আগে গত শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে টঙ্গী পূর্ব থানার স্টেশন রোড এলাকার হাজীর বিরিয়ানি হোটেলের সামনের রাস্তা থেকে লাশের খণ্ডিত অংশ এবং পরদিন শনিবার বিকালে টঙ্গী বনমালা রোড এলাকায় একটি বাসার টয়লেটের ওপরের কুঠুরি থেকে পলিথিনে মোড়ানো মাথাটি উদ্ধার করা করে পুলিশ। নিহত মো. অলি মিয়া (৩৬) নরসিংদী সদর থানার করিমপুর এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে। তিনি আজমেরী পরিবহনের চালকের সহকারী ছাড়াও বিভিন্ন সময় হকারি করে মালামাল বিক্রি করতেন। ঘটনার দিন রাতেই অলির স্ত্রী শাহানা আক্তার বাদী হয়ে টঙ্গী পূর্ব থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবও ছায়া তদন্ত শুরু করে। গ্রেপ্তাররা হলেন নরসিংদীর করিমপুর গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে আপেল মাহমুদ সাদেক (৪২), তার স্ত্রী শাওন বেগম (৩২) এবং একই এলাকার সাজ্জাদ হোসেন রনি (২৫)। অপর গ্রেপ্তারের নাম বাপ্পি। তাকে গাজীপুরের গাছা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সম্মেলনে র‌্যাব জানায়, শনিবার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর এলাকা থেকে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাতেই তাদের র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, হত্যাকাণ্ডটি পূর্ব পরিকল্পিত। অলি মিয়ার সঙ্গে আপেল, রনি ও শাওন আক্তারের পরিচয় ছিল। অলি প্রায় সময় আপেলের বাসায় যাতায়াত করতেন। এর মধ্যে অলি আপেলের স্ত্রী শাওনের চরিত্র নিয়ে ‘কটূক্তি’ করেন। এছাড়া কয়েক বছর আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় লোকজনদের দিয়ে রনিকে মারধর করান অলি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আপেল ও রনি কৌশলে অলিকে টঙ্গীর বনমালা এলাকার রেললাইনে নিয়ে যান। তবে দীর্ঘ সময় ট্রেন না আসায় অলিকে নিয়ে বাসায় ফেরেন তারা। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিছানায় ফেলে বেল্ট দিয়ে হাতপা বেঁধে বালিশচাপা দিয়ে অলিকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তারা। প্রমাণ লোপাট করতে পরদিন বাজার থেকে ছুরি, কালো পলিথিন ও স্কচটেপ কিনে আনেন তারা। পরে অলির লাশ আট খণ্ড করে পলিথিনে পেঁচিয়ে টয়লেটের ভেতর রেখে দেওয়া হয়। আর খণ্ডিত মাথা রাখা হয় টয়লেটের ছাদে। শুক্রবার টঙ্গীর বনমালা এলাকা থেকে রিকশায় করে স্টেশন রোড এলাকায় সড়কের পাশে খণ্ডিত লাশের ব্যাগটি ফেলে পালিয়ে যায় আপেল ও রনি। আর পুরো বিষয়টি নজরদারি করেন আপেলের স্ত্রী শাওন। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছে থাকা তিনটি মোবাইল ফোন, তিনটি সিম কার্ড ও ১৫০ টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা আশিকুর রহমান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকক্সবাজারে ৯ বালুমহালের ইজারা কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ হাইকোর্টের
পরবর্তী নিবন্ধজান আলী হাটে দুই ট্রেনের ক্রসিং অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন যাত্রীরা