কাপ্তাই উপজেলায় গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টিতে উপজেলার ঢাকাইয়া কলোনিতে বসবাসকারী ৩ শতাধিক পরিবার চরম ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। পরিবারগুলো এতটাই ঝুঁকিতে রয়েছেন যে কোনভাবে একটি ঘর ধ্বসে পড়লে এর সাথে সাথে শতাধিক ঘরবাড়ি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটি ঘরের সাথে আরেকটি ঘর এমন লাগোয়াভাবে নির্মিত হয়েছে যে একটির সাথে আরেকটি প্রায় লেগে আছে। এই এলাকায় নাগরিক সুবিধার কিছুই নেই। তারপরও শতশত মানুষ এখানে পরিবার–পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন। স্থানীয়রা জানান, এখানে শতশত বসতি গড়ে উঠলেও কোনো ধরনের গাড়ি যাতায়াতের ব্যবস্থা নেই। অসবাধানতাবশত আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি সামাল দিতে দমকল বাহিনীর কোন লোক এই এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না।
জানা গেছে, কয়েক বছর আগে এই টিলায় আগুন লেগেছিল। খবর পেয়ে সাথে সাথে দমকল বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ছুটে আসেন। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই প্রায় ৮০টি ঘর পুড়ে যায়। দমকল বাহিনীর সদস্যদের দুর্ঘটনাস্থলে প্রবেশ করার সুযোগ না থাকায় দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। আগুন ছাড়াও এই বৃষ্টিতে পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা রয়েছে।
কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ বলেন, বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া হলে আমরা সবার আগে ঢাকাইয়া কলোনি নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকি। সারাক্ষণ ভয়ের মধ্যে থাকি কখন ভয়াবহ দুর্ঘটনার খবর আসে। তবে এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় একটি স্কুলে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়। ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেবার চেষ্টা করি। কাপ্তাই উপজেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ভারী বৃষ্টি ও ঝড় তুফান হলে আমরা তথ্য অফিসের মাধ্যমে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করে থাকি। সবাই যেন আশ্রয় কেন্দ্রে আসে সে ব্যাপারে মাইকিং করে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করি।
কাপ্তাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুব হাসান বলেন, বৃষ্টির সময় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আমাদের বিদ্যালয়কে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়। এলাকাবাসীর সহায়তায় এ ব্যাপারে আমরা সব সময় প্রস্তুত থাকি। তবে ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের একটি স্থায়ী নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যেতে হবে। এভাবে বৃষ্টি বা ঝড় তুফান আসলেই সবাইকে সতর্ক করা এবং আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া কোন সমাধান নয়।