ঝাউবন কেটে ঝুপড়ি ঘর

টেকনাফ সৈকত

টেকনাফ প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ at ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ

টেকনাফের সমুদ্র সৈকতের উপকূল জুড়ে চলছে ঝাউগাছ নিধন। পাশাপাশি গড়ে উঠেছে ঝুপড়ি ঘর, খেলার মাঠ, সমিতির অফিস। এছাড়া গড়ে উঠছে অবৈধ বসতি ও বিভিন্ন স্থাপনা; ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। এতে সৈকতের সৌন্দর্য হারানোর পাশাপাশি অরক্ষিত হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সৈকত তীর ও মেরিন ড্রাইভ সড়ক।

সূত্র জানা যায়, টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মেরিন ড্রাইভসংলগ্ন নৌকাঘাট ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা। জেলেদের আসাযাওয়া, আহরিত মাছ অবতরণসহ নানা কারণে এলাকাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ কারণে সৈকতের তীর রক্ষায় লাগানো ঝাউগাছের ভেতর গড়ে উঠছে অস্থায়ী বসতি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অসংখ্য ঝাউগাছ কেটে চা ও মুদির দোকান, ফিশিং আড়ত, ঘরসহ শতাধিক স্থাপনা ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। অনেকে আবার মাছ ব্যবসায়ী সমিতি নাম ব্যবহার করে ঘর স্থাপন করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝাউবনের ভেতর এবং মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে রাখা হচ্ছে ময়লাআবর্জনা। আবর্জনার দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশের এলাকায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঝাউবন দখলে টার্গেট করা স্থানে ময়লা ফেলে ভরাট করে চালানো হয় দখলযজ্ঞ। এছাড়া সাগরের তীর থেকে মাছ আনতে ঝাউবন কেটে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। দিনরাত গাড়ি চালিয়ে সেখান থেকে পরিবহন করা হচ্ছে মাছ ও ট্রলারের পণ্য। তাছাড়া ঝাউবনের ভেতর নির্মাণ করা হচ্ছে ইঞ্জিলচালিত নৌকা।

শামলাপুর নৌকাঘাট থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের টেকনাফ সি বিচ এলাকা জুড়ে দেখা যায়, ঝাউবনের ভেতর তৈরি করা হচ্ছে ছোট ছোট ঘর। সুযোগ পেলে কাটা হচ্ছে ঝাউগাছ। বড় বড় ঝাউগাছগুলো রাতের আঁধারে কেটে ফেলা হচ্ছে। এতে একদিকে সৈকতের সৌন্দর্যহানির পাশাপাশি পর্যটন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। পাশাপাশি উজাড় হচ্ছে ঝাউবন ও দখল হচ্ছে সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এর আগেও মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে টেকনাফ সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক, টেকনাফ সদর মহেশখালীয়া পাড়া, তুলাতুলীদক্ষিণ লম্বরীসংলগ্ন সৈকতে ঝাউবাগান কেটেছিল একটি চক্র। শামলাপুর এলাকার মতো লম্বরী, শীলখালী ইত্যাদি এলাকায় খেলার মাঠ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ঝুপড়ি ঘর, মৎস সমিতির অফিস তৈরি করে দখল অব্যাহত রেখেছে একটি চক্র।

শামলাপুর মৎস্য উপকূলীয় মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কামাল হোসাইন বলেন, নৌকার ঘাটে ঝাউবনের ভেতর বসতিগুলো অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। এগুলো একবার উচ্ছেদ করা হয়েছিল। পরে আবার দখল হচ্ছে।

টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, সৈকতের ভাঙন প্রতিরোধে ঝাউবন ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া প্রাকৃতিক রূপ ও সৌন্দর্য বর্ধনেও ঝাউগাছের গুরুত্ব রয়েছে। এখানে গাছ নিধন ও দখল প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

কঙবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ সরওয়ার আলম বলেন, ঝাউবনে যারা অবৈধ বসতি ও স্থাপনা গড়ে তুলেছে, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, সৈকত এলাকা পরিদর্শন করা হবে। সেই সঙ্গে বন বিভাগকে নিয়ে দখল উচ্ছেদসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএসসির শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টাকা ছিনতাই করে ২ মাস আত্মগোপন
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্মার্ট স্কুল বাস প্রথম পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত