সরবরাহ বাড়ার কারণে চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে অবশেষে ঝাঁজ কমছে পেঁয়াজের। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে দেশিসহ কয়েকটি দেশের পেঁয়াজে দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত। আড়তদাররা বলছেন, সম্প্রতি চট্টগ্রাম, ফেনী–কুমিল্লাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় বন্যার কারণে পেঁয়াজের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। তবে এখন সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে।
গতকাল চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৯৫ টাকা, মিশরের পেঁয়াজ ৮০ টাকা এবং পাকিস্তাানি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। তবে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন আড়তদা জানান, পেঁয়াজের বাজার চাহিদা ও যোগানের ওপর নির্ভর। চাক্তাই খাতুনগঞ্জে গুটিকয়েক ব্যক্তি পেঁয়াজ আমদানি করেন। বাকিরা কমিশনের ভিত্তিতে পেঁয়াজ বিক্রি করেন। অর্থাৎ পেঁয়াজ আমদানিকারক যে দাম নির্ধারণ করে দেন, সেই দামে বিক্রি করেন। এর বিনিময়ে কেজি প্রতি তারা নির্ধারিত একটি কমিশন পেয়ে থাকেন। তাই আড়তদারদের পক্ষে দাম উঠানামা করার কেনো সুযোগ নেই। হারুন অর রশিদ নামের একজন পেঁয়াজ আড়তদার বলেন, আমাদের দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়লে সিন্ডিকেট কারসাজির অভিযোগ উঠে। আসলে পেঁয়াজের ক্ষেত্রে একদমই ভুয়া বিষয়। পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য। চাইলেই কেউ বেশিদিন মজুদ করে রাখতে পারে না। এখন যেমন সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমে যাচ্ছে।
চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম দৈনিক আজাদীকে বলেন, পেঁয়াজের বাজার এখন নিম্নমুখী। এছাড়া বেচাবিক্রিও একটু কম। কিছুদিন আগে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে দাম বেড়েছিল। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ে। ফলে বাজারে দাম কমতে থাকে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। দামও কমছে। পাইকারিতে যেভাবে কমে, খুচরায় সেভাবে কমে না। পাইকারি ব্যবসায়ীরা সীমিত লাভে পেঁয়াজ বিক্রি করেন।
ইলিয়াছ উদ্দিন নামের এক ভোক্তা জানান, পেঁয়াজের বাজার অনেক দিন ধরে উঠানামা করছে। প্রশাসন যখন দাম বেড়ে যায়, তখন অভিযানে নামে। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা করেন। অথচ প্রশাসন যদি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতো, তবে শুধু পেঁয়াজ নয় আর কোনো পণ্যের দাম উঠানামা করতে পারতো না।