ফুটবলে ইরান এবং ইংল্যান্ডের শক্তি, সামর্থ্য, অভিজ্ঞতা এবং অর্জন সবকিছুর মধ্যে বিশাল ফারাক। ইংল্যান্ড যেখানে ১৬ বার বিশ্বকাপ খেলছে সেখানে ইরান খেলছে ষষ্ঠবারের মত। তারপরও এশিয়ার সেরা দল ইরান। কিন্তু ইউরোপের ফুটবলের সামনে দাড়ানোটা বেশ কঠিন এশিয়ার দলগুলোর জন্য। যদিও বলা হয়ে থাকে বিশ্বকাপে ছোট কিংবা বড় দল বলতে কিছু নেই। তাইতো কাতার বিশ্বকাপে জয় দিয়েই শুরু করতে চায় ইরান এবং ইংল্যান্ড দু দলই। ১৯৬৬ সালের পর প্রায় অর্ধ শতকেরও বেশী সময় ধরে বড় কোন শিরোপা জয় করতে পারেনি ইংলিশরা। এবার এই শিরোপা খরা কাটানোর লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামছে তারা। গত দুটি বড় আসরে খুব কাছাকাছি গিয়েও শিরোপার স্বাদ পায়নি ইংলিশরা। অপরদিকে ইরান কখনোই প্রথম রাউন্ডের গন্ডি পার হতে পারেনি বিশ্বকাপে। তারপরও কাতারের চেনা পরিবেশে ইংলিশদের একবিন্দু ছাড় দিতে নারাজ ইরান।
স্বাগতিক কাতারকে নিয়ে মাঠের বাইরের সমালোচনায় ইংলিশদেরও বেশ সরব ভূমিকা ছিল। শেষ পর্যন্ত সব কিছুকে পিছনে ফেলে গ্যারেথ সাউথগেটের দল ফুটবলে মনোযোগী হবার সুযোগ পেয়েছে। এখন সময় এসেছে মাঠে নিজেদের প্রমাণের। বিশ্বকাপে নিজেদের এগিয়ে নেবার জন্য চাপও রয়েছে সাউথগেটের দলের ওপর। বি গ্রুপের প্রথম ম্যাচ থেকেই তাই সেরাটা দিতে চায় ইংলিশরা। ইরান, ওয়েলস ও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে ইংল্যান্ডকে সুস্পষ্ট ফেবারিট হিসেবেও ধরা হচ্ছে। ছয় বছর আগে ইংল্যান্ডের দায়িত্ব নিয়েছিলেন সাউথগেট। অপেক্ষাকৃত তরুণদের উপর ভরসা করেই এগিয়ে যেতে থাকেন সাউথগেট। ২০১৬ ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপে আইসল্যান্ডের কাছে হেরে বিদায়ের লজ্জাজনক স্মৃতি এখনো অনেকে ভুলতে পারেনি। এই বিদায়ে তৎকালীন কোচ রয় হজসনের বিদায়ও ত্বরান্বিত হয়।
এরপরই সাউথগেট অধ্যায়ের শুরু। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালে খেলা ছিল বিস্ময়কর। এরপর থেকেই কার্যত সাউথগেটের উপর আস্থা বাড়তে থাকে ইংলিশ সমর্থকদের। এরপর গত বছর ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে নিয়ে গিয়ে ৫৫ বছর পর ইংল্যান্ডকে বড় কোন টুর্নামেন্টের শিরোপার সবচেয়ে কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন সাউথগেট। যদিও ইতালির কাছে হেরে শিরোপা হাতে তোলা হয়নি।
চার বছর আগে ক্রোয়েশিয়ার কাছে সেমিফাইনালে পরাজিত হয়ে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়েছিল। এবার সব কিছু ভুলে আর চাপে পড়তে চাননা সাউথগেট। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে জিতে মাঠ ছাড়াটা ইংল্যান্ডের অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। কিন্তু পরের ম্যাচেই আবার জিততে না পারার ইতিহাসও তাদের রয়েছে। তাই বেশ সতর্ক ইংলিশরা।
অপরদিকে ইরান অবশ্য ভারমুক্ত হয়েই মাঠে নামবে। কারণ তারা জানে এই ম্যাচে হারানোর কিছু নেই। এদিকে ইরানের অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার ওমিষ এব্রাহিমি উরুর ইনজুরির কারণে দল থেকে ছিটকে গেছেন যা পুরো দলের জন্য অনেক বড় একটি ধাক্কা। বায়ার লেভারকুজেনের স্ট্রাইকার সারদার আজমুন নিজেকে ফিট প্রমান করে বিশ্বকাপে মাঠে নামার জন্য মুখিয়ে আছেন।
যদিও ইরানের কোচ কার্লোস কুইরোজ পের্তো সেন্টার ফরোয়ার্ড মেহদি টারেমিকে নিয়ে দারুণ আশাবাদী। বিশ্বকাপে দুদল দীর্ঘ সময় খেললেও আগে কখনোই মুখোমুখি হয়নি। এবারই প্রথমবারের মত মুখোমুখি হবে দু দল। তাই প্রথম সাক্ষাতে জয় তুলে নিতে চাইবে দু দল সেটাই নিশ্চিত। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭ টায় শুরু হবে ম্যাচটি।