জয়দেবপুরে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়

আজাদী ডেস্ক | রবিবার , ১৯ মার্চ, ২০২৩ at ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

১৯৭১ সালের এদিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। এদিন পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ হয় জয়দেবপুরে (গাজীপুর)। সেখানে ৫০ জন শহীদ এবং দুই শতাধিক আহত হন। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে রাজধানী ঢাকা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। দেশজুড়ে স্লোগান ওঠে– ‘জয়দেবপুরের পথ ধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর’। হাজার হাজার মানুষ লাঠিসোটা, বর্শাবল্লম নিয়ে রাজপথে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়। এদিন সন্ধ্যায় জয়দেবপুর শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য সান্ধ্য আইন জারি করা হয়। জয়দেবপুরে নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর সেনাবাহিনীর গুলিবর্ষণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সন্ধ্যায় শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, যারা বুলেট ও শক্তি দিয়ে গণ আন্দোলনকে স্তব্ধ করবেন বলে ভেবেছেন তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। বাংলাদেশের মানুষ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। কিন্তু এর অর্থ এই নয়, তারা শক্তি প্রয়োগে ভয় পায়। একদিন বিরতির পর সকালে আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যে তৃতীয় দফা একান্ত বৈঠক হয়। দেড় ঘণ্টাব্যাপী ওই বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে কোনো সহকারী উপস্থিত ছিলেন না। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সরকারিবেসরকারি ভবন ও বাসভবনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সরকারিআধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি চলে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। ছাত্রছাত্রী ও তরুণতরুণীদের কুজকাওয়াজ ও অস্ত্রচালন প্রশিক্ষণ চলে। সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট ভবনে উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক হয়। ন্যাপ প্রধান মওলানা ভাসানী চট্টগ্রামে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া অহেতুক ঢাকায় এসে সময় নষ্ট করছেন। ইয়াহিয়া খানের বোঝা উচিত শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ছাড়া পাকিস্তানকে রক্ষা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, জেনারেল ইয়াহিয়া খানের মনে রাখা উচিত যে, তিনি জনগণের প্রতিনিধি নন।

এদিন জয়দেবপুর থেকেই সর্বপ্রথম শুরু হয়েছিল বর্বর পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধ। এ দিনটি প্রথম হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল স্বাধীনতার জন্য গাজীপুরের সংগ্রামী জনতার হাতের অস্ত্রে প্রথম গুলি।