চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হলসমূহ খোলার দাবি দিন দিন জোরালো হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবি স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খোলার ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া হলে রিডিং রুম চালু করা, বিভাগের সেমিনারগুলো অফিস টাইমে খুলে দেওয়া, হলের গ্রন্থাগারে যথেষ্ট বই সংগ্রহ, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার খুলে দেওয়া, বিভিন্ন বিভাগে সমাপ্ত পরীক্ষাসমূহের ফলাফল প্রকাশ এবং উন্নয়ন ফির নামে যথেচ্ছা টাকা গ্রহণ নিয়ন্ত্রণসহ আটটি দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন চবি সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে প্রক্টরের মাধ্যমে চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে এ স্মারকলিপি দেন তারা। আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ও চবি সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের মুখপাত্র ফোরকানুল আলম স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, করোনা পরবর্তী অবস্থা বিবেচনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ৮ দফা উপাচার্য বরাবর আমরা সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ স্মারকলিপিটি পেশ করছি।
স্মারকলিপিতে বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হলসমূহ খোলার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। উচ্চশিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য বাস্তবায়নকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে বিদ্যমান সেশনজট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। করোনা পরবর্তী অনেকের আর্থিক অবস্থা যথেষ্ট ভালো নয় বিধায় মানবিক বিবেচনায় বিভিন্ন বর্ষের ভর্তির ক্ষেত্রে সেশন ফি অর্ধেক মওকুফ করতে হবে। বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল এর নামে যথেচ্ছা ফি গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ সকল বিবিধ ফি যাতে যৌক্তিক হারে গ্রহণ করা হয়, সে বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়কে নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা চলমান থাকায় এবং সামনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা চলমান থাকবে বিধায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এবং প্রত্যেক বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিসমূহ শিক্ষার্থীদের জন্য অফিস চলাকালীন সময়ে খোলা রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক হলে শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় বইপত্র এবং সুবিধা সমৃদ্ধ রিডিং রুম চালু করতে হবে। বিভাগসমূহে বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর দ্রুততম সময়ের ভেতর ফলাফল প্রকাশ করার বাধ্যবাধকতা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকেন কিংবা অনেক শিক্ষার্থীকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে পরীক্ষায় অকৃতকার্য করিয়ে দেন- এই অপচর্চা বন্ধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৭৩ এর উপধারা ৫৪(৩) এবং ৫৫(৩) এর আলোকে উপাচার্য যেন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ ব্যাপারে ফোরকানুল আলম আজাদীকে বলেন, দেশের সবকিছু স্বাভাবিক নিয়মে চললেও বন্ধ রয়েছে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখন অনেকের পরীক্ষা চলছে আবার অনেক টিউশনির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে হচ্ছে। এ অবস্থায় হল খোলা না থাকায় বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে তাদের। আশা করি প্রশাসন আমাদের যৌক্তিক দাবিসমূহ আদায়ে সহযোগিতা করবে।