জেনারেল হাসপাতালে এক মাস ধরে জলাতঙ্কের টিকার সংকট

কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে, দরিদ্রদের জন্য সমস্যা

জাহেদুল কবির | সোমবার , ১০ মার্চ, ২০২৫ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

নগরীর আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তনিমা ইসলাম দুই বছর ধরে শখ করে বিড়াল পুষছেন। গত শনিবার রাতে আচমকা তার পায়ে কামড় বসিয়ে দেয় পোষা বিড়াল। পায়ে জখম নিয়ে জলাতঙ্কের টিকা দিতে গেলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে টিকার সরবরাহ নেই। বাইরে থেকে কিনতে হবে। শুধু তনিমা নন, প্রতিদিন পোষা কুকুর, বিড়াল, ইঁদুরসহ বিভিন্ন প্রাণীর কামড় ও আঁচড়ের শিকার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা সবাইকে একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, গত প্রায় এক মাস ধরে টিকার সংকট চলছে। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীদের বাড়তি দামে বাইরে থেকে টিকা নিতে হচ্ছে। জানা গেছে, চট্টগ্রামে সরকারিভাবে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল এবং ফৌজদারহাট বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতালে রোগীদের বিনামূল্যে জলাতঙ্ক রোগের টিকা দেওয়া হয়। কোনো প্রাণী কামড়ালে মোট তিনটি টিকা নিতে হয়। কামড়ানোর প্রথম দিন একটি, তৃতীয় দিন দ্বিতীয়টি এবং কামড়ানোর সপ্তম দিনে তৃতীয়টি। এছাড়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ক্যাটাগরি৩ এবং তীব্র ক্যাটাগরি২ এর অনেক রোগীকে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধক ইমিউনোগ্লোবুলিন নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। বর্তমানে বাইরে থেকে রোগীদের প্রতিটি টিকা কিনতে হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। এছাড়া ইমিউনোগ্লোবুলিন কিনতে হচ্ছে ৭০০ টাকায়। আর্থিক সচ্ছল রোগীদের বাইরে থেকে টিকা কিনতে সমস্যা না হলেও দরিদ্র রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এদের একজন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাসিন্দা দিনমজুর ইসমাইল হোসেন। তিনি জানান, বাড়ির আঙিনায় তার ১৪ বছর বয়সী ছেলেকে কুকুরে কামড় দেয়। স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন বাইরে থেকে টিকা কিনতে হবে। হাতে টাকাও ছিল না। এক আত্মীয়ের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে টিকা দেন বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মান্নান আজাদীকে বলেন, প্রায় এক মাস ধরে র‌্যাবিস ভ্যাকসিনের (জলাতঙ্কের টিকা) সরবরাহ নেই। আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৬০৭০ জন রোগী টিকা নিতে আসেন। হাসপাতালে টিকার সরবরাহ না থাকায় রোগীদের বাইরে থেকে টিকা কিনে দিতে হচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে ৫ হাজার টিকা এবং ২ হাজার ইমিউনোগ্লোবুলিনের চাহিদা দিয়েছি। তবে চাহিদা দিলেও সব সময় চাহিদা অনুপাতে টিকা পাই না। টিকার বিষয়ে খোঁজ নিয়েছি। হয়ত এ সপ্তাহে কিছু পাব।

এদিকে ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশীদ আজাদীকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে টিকার ঘাটতি নেই। রোগীদের আমরা বিনামূল্যে টিকা দিচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজামিন না দিয়ে ৯০ দিনে ধর্ষণের বিচার
পরবর্তী নিবন্ধরাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন কেন অবৈধ নয় : হাই কোর্ট