জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিট ২ মাস ধরে বন্ধ

১৮ শয্যার সবগুলো ভেন্টিলেটর নষ্ট, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকট

জাহেদুল কবির | বৃহস্পতিবার , ২২ মে, ২০২৫ at ৬:৫২ পূর্বাহ্ণ

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ধুঁকছে ২৫০ শয্যার চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। করোনকালীন রোগীদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) সেবা দিয়ে আলোচনায় আসে হাসপাতালটি। এখন হাসপাতালটির আইসিইউ বিভাগ রয়েছে ‘আইসিইউ’তে। হাসপাতালের ১৮টি শয্যার আইসিইউতে কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের যন্ত্র (ভেন্টিলেটর) ছিল ২২টি। এখন সবগুলোই নষ্ট। ফলে মুমূর্ষু রোগীদের ভেন্টিলেটর সেবা দেয়া যাচ্ছে না। দীর্ঘ সময় এসব ভেন্টিলেটর মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ না করায় নষ্ট হয়ে গেছে জানান সংশ্লিষ্টরা। ফলে হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের পূর্ণাঙ্গ সেবা গত ২ মাস ধরে সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে আইসিইউ ইউনিটে মূলত হাই ডিফেন্ডেন্সি ইউনিটের (এইচডিইউ) সেবা দেয়া হচ্ছে। যেসব রোগীর ভেন্টিলেশনসহ পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সাপোর্ট দরকার, তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে কখনো পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সেবা দেয়ার মতো যন্ত্রপাতি ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছিল না। পূর্ণাঙ্গ রোগীকে আইসিইউ সেবা দেয়ার জন্য সমন্বিত চিকিৎসা দরকার। জেনারেল হাসপাতালে হৃদরোগ বিভাগ, নেফ্রোলজি বিভাগ ও নিউরোলজি বিভাগ নেই। এখন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে একজন রোগী যদি আইসিইউ’তে ভর্তি করানো হয়, এক্ষেত্রে তার পরিপূর্ণ সেবা নিশ্চিত করার হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দরকার। আবার ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে কেউ যদি আইসিইউ’তে ভর্তি হন, তবে একজন নিউরোলজিস্ট বা নিউরো সার্জারির চিকিৎসক দরকার। এছাড়া আইসিইউ’র অভ্যন্তরে কিডনি রোগীর জন্য ডায়ালাইসিস মেশিন থাকতে হয়, এখন আমাদের তো নেফ্রোলজি বিভাগ নেই। তাই আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণে আইসিইউ’র পূর্ণাঙ্গ সেবা শুরু থেকেই আমরা দিতে পারতাম না।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গত ২০২০ সালে ১৮ শয্যার আইসিইউ বিভাগ চালু করা হয়। আইসিইউ শয্যার জন্য ২২টি ভেন্টিলেটর রয়েছে। এর মধ্যে সবগুলোই নষ্ট। অপরদিকে ৩৩টি বাইপাইপের মধ্যে সচল আছে মাত্র ৫টি এবং ৩৯টি হাই ফ্লো ন্যাসাল ক্যানুলার মধ্যে সচল রয়েছে মাত্র ৩টি। বর্তমানে ৬ জন অ্যানেস্থেশিয়া কনসালটেন্ট দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। এদের মধ্যে ৪ জন আবার সংযুক্তিতে আছেন। কনসালটেন্টদের আইসিইউ সেবা ছাড়াও অপারেশনের রোগীদের অ্যানেস্থেশিয়া দেয়ার কাজও করতো হয়।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের অ্যানেস্থেশিয়া ও আইসিইউ ইউনিটের কনসালটেন্ট ডা. রাজদ্বীপ বিশ্বাস দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমাদের আইসিইউ সেবা পুরোপুরি বন্ধ এটি বলা যাবে না। আমরা রোগীদের আইসিইউ’র পরিপূর্ণ সাপোর্ট দিতে পারছি না, এটি হচ্ছে বিষয়। হাসপাতালে ভেন্টিলেটর নষ্ট থাকার কারণে মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা চিকিৎসা দিতে পারছি না। আমাদের হাসপাতাল থেকে কয়েক মাস আগে ২২ জন চিকিৎসকের সংযুক্তি বাতিল করা হয়েছে। ফলে এখানে চিকিৎসকেরও সংকট রয়েছে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবদুল মান্নান বলেন, আমরা ১০টি আইসিইউ শয্যা পুরোপুরি সচল করতে কাজ শুরু করেছি। আশা করি বিষয়টি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত
পরবর্তী নিবন্ধএনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবি