নগরীর সদরঘাট থানাধীন মাদারবাড়ি বালুর মাঠ এলাকার ৫ তলা বিশিষ্ট মিনু ভবন থেকে ১০টি গ্রেনেড, দুটি সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। রায়ে জেএমবি (জামাআতুল মোজাহেদিন বাংলাদেশ) সদস্য মো. রাকিবুল হাসানকে ৫ বছর ৬ মাসের সাজা ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ হয়েছে। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রামের সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আব্দুল হালিম এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. রাকিবুল হাসান।
ট্রাইব্যুনালের পিপি মনোরঞ্জন দাশ আজাদীকে বলেন, তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের মামলার রায় ঘোষণার আগে মোট ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে আদালত। এর মধ্যে বাড়ির মালিকও রয়েছেন। সন্ত্রাস বিরোধী আইনের দুটি ধারায় রাকিবুল হাসানকে ৫ বছর ৬ মাসের এ সাজা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৬(২) ধারায় ৫ বছর এবং ৮ ধারায় ৬ মাসের সাজা দেয়া হয়। এ মামলায় একজন শিশুও রয়েছে। শিশু আইনে শিশু আদালতে বর্তমানে তার বিচার হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ মামলাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদ্ধারকৃত গ্রেনেড দিয়ে সদরঘাট থানা উড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল জঙ্গি রাকিবুলের। তিনি নব্য জেএমবির আত্মঘাতী দলের সদস্য ছিলেন। এ উদ্দেশ্যে অন্য একজনসহ মিনু ভবনে উঠেন এবং ‘ডন’ নামের এক নেতার নেতৃত্বে থানাসহ আশেপাশের নানা জায়গায় হামলার ছক আঁকেন। পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙে দিতেই নব্য জেএমবি এ পরিকল্পনা করে।
২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি মাদারবাড়ি বালুর মাঠ এলাকার মিনু ভবন নামের একটি ভবনের পঞ্চম তলা থেকে গ্রেনেডসহ রাকিবুল হাসান ও তার সহযোগী শিশু আশফাককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১০টি তাজা গ্রেনেডের পাশাপাশি সেদিন দুটি সুইসাইডাল ভেস্ট, দুটি স্কেচ ম্যাপ ও দুটি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করা হয়। মূলত নিখোঁজ এক কিশোরের সন্ধানে নেমে উক্ত জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ।
এ ঘটনায় সদরঘাট থানায় তখন মামলা করেন তৎকালীন নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্য পরিদর্শক রাজেস বড়ুয়া। পরে সিটিটিসি রাকিবুলদের বিরুদ্ধে আদালতের কাছে চার্জশিট দাখিল করে। উক্ত চার্জশিট অনুয়ায়ী আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, দণ্ডপ্রাপ্ত রাকিবুল হাসান কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোদালা কাটা সরকার বাড়ির মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে। তার ছদ্মনাম সালাহ উদ্দিন আয়ুবী, আবু তাছিব আল বাঙালী ও হাসান।