ঘন ঘরবাড়ি আর ব্যস্ত জীবনের শহর ঢাকার মধ্যেই সবুজে ভরা, ছায়াঘেরা স্থাপনা গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর’ হিসেবে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে অন্তর্র্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে। জাতীয় সংসদের উত্তর কোণে শেরেবাংলা নগরের প্রাসাদোপম গণভবন নামের বাড়িটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন ছিল। প্রবল গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে গত ৫ আগস্ট এই বাড়ি থেকেই পালিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তারপর জনতার রুদ্ররোষে তছনছ হয় পুরো গণভবন, লুটপাট হয় ভবন ও ভবন এলাকার সব কিছু। গতকাল বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের পর যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, গণভবনকে স্মৃতি জাদুঘরে রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল ও জোট বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল। সম্পূর্ণ বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজনীতি করতে পারবে কি, পারবে না সেটা জনগণের উপর ছেড়ে দিলাম। তবে আমরা মনে করি কোনো পাবলিক প্রোগ্রাম করার ক্ষেত্রে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা ভাবছি কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। এখনও সুনির্দিষ্ট আলোচনা হয়নি। তবে আমরা এটাকে সম্পূর্ণভাবে নিরুৎসাহিত করব। বিচার করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে, মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে তাদের বিচার নিশ্চিত করা হবে। আসিফ মাহমুদ বলেন, এটি যেহেতু ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের সরকার। তাই আমরা মনে করি বিচারের আগ পর্যন্ত, বিচার নিশ্চিত হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুর্নবাসনের সুযোগ নেই।
গণভবন নামের যথার্থ অনুযায়ী গণের (জনগণের) ভবন হয়ে উঠতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। বলেন, আমাদের যে গণভবন আছে, এটা নামের মত ‘গণের ভবন’ হয়ে উঠতে পারেনি। এ দেশের মানুষ, ছাত্র–জনতা একটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এটাকে জয় করেছে। এটাকে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
আসিফ মাহমুদ বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত জানিয়ে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি, শহীদদের স্মৃতি এবং বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে যত অন্যায়, অবিচার হয়েছে সব স্মৃতিকে সংরক্ষণ করার জন্য গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। খুব দ্রুতই এর কাজ শুরু হবে। জনগণ যেভাবে বিজয় করেছে, সেই অবস্থাতেই রাখা হবে। এর মধ্যেই ভেতরে একটা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করব। যাতে অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষিত থাকে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।