ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্য ধরে প্রাক–প্রস্তুতিমূলক সব ধরনের কাজ গুছিয়ে জুলাইয়ে কর্মপরিকল্পনার মুদ্রিত কপি জনসম্মুখে প্রকাশ করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এরইমধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, আরপিও–আচরণবিধি, নীতিমালাসহ আইন সংস্কার, সীমানা নির্ধারণ, নতুন দলের নিবন্ধনসহ সার্বিক কাজ শেষ করে তফসিলের আগে মতবিনিময় করতে চায় সাংবিধানিক সংস্থাটি। গতকাল বুধবার খসড়া রোডম্যাপ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের। অন্তর্বর্তী সরকার ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার যে ধারণা দিয়ে আসছে তা সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন–ইসির সব ধরনের প্রস্তুতি চলমান রয়েছে বলে জানান এ নির্বাচন কমিশনার। ভোটের পথে ইসির কাজগুলোকে ‘রোডম্যাপ’ না বলে কর্মপরিকল্পনা (অ্যাকশন প্ল্যান/ওয়ার্ক প্ল্যান) হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে রোডম্যাপের যে বিষয়টি, যে কর্মপরিকল্পনাটি, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একটা নিজস্ব কর্মপরিকল্পা ধরেই এগোচ্ছি। সে কর্মপরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে প্রাথমিক পর্যায়ে আসনের প্রশাসনিক বিন্যাসের তথ্য, ভোটার তালিকার তথ্য সংগ্রহ ও শেষ পর্যায়ে গুছিয়ে এনেছি, নিবন্ধনের কাজও একটা পর্যায়ে এসেছে। আইনের সংশোধনী পেলে মাস তিনেকের মধ্যে কমিশন শেষ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে আমরা মোটামুটিভাবে ওয়ার্ক প্ল্যানের প্রি–ওয়ার্ক যেটি, সেটি হয়ে যাবে। আশা রাখি, মুদ্রিত কর্মপরিকল্পনা, যেটি নির্বাচনের আগে ইসি পাবলিশ করে, আমরা জুন–জুলাইয়ের দিকে প্রিন্টেড কপি পেয়ে যাব। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকার ঘোষিত ডিসেম্বরের টাইমলাইনকে সামনে রেখে এগোচ্ছে।
নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন কাজ শেষ করে নতুন–পুরনো সব দল নিয়ে সংলাপে বসতে চায় ইসি। এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত তিনটি নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। তবে তারা সময় বাড়ানোর জন্য বলেছে। এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধন পেতে আগ্রহী দলগুলোর আবেদন নেওয়া হবে। সময় বাড়ানোর এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত হবে, বলেছেন তিনি।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে অংশীজনদের সঙ্গে বসার কথা তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নতুন দল শর্ত পূরণ করে আসার পরে, নতুন যারা হবে এবং পুরনো যারা আছে তাদের নিয়েই আমরা বসবো। নিবন্ধনের কাজ যদি শেষ না করি, তাহলে নতুনদের তো কষ্ট থাকবে আমরা আসতে পারলাম না।
দল নিবন্ধন শেষ করে আগস্ট–সেপ্টেম্বর বা সম্ভব হলে আরও আগে মতবিনিময় হবে বলে এ নির্বাচন কমিশনার বলেছেন। বর্তমান যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, তার আরও উন্নতি হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বাস্তবেও আমরা রমজান মাসে যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখেছি বা অতীতের সঙ্গে একটা তুলনামূলক পর্যালোচনা করি তাহলে আমি মনে করি, ধারাবাহিকভাবে তা ইম্প্রুভ হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে গিয়েছি, তারা বলেছে যে রমজান মাসে আমাদের যে পারফরম্যান্স এটি আমরা আরও ইম্প্রুভ করার চেষ্টা করছি। এবং এটি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে আমরা নির্বাচন করতে কোনো বাধা মনে করি না। আগামী ছয় থেকে আট মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে আশা করেন তিনি।