বান্দরবানের পাহাড়ে চাষ করা জুমের ফসল ঘরে তোলার সময় উৎসবে মেতেছে ম্রো জনগোষ্ঠী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চিম্বুক পাহাড়ের ম্রোলং পাড়া মাঠে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আতাউর রহমান। এসময় অন্যদের মধ্যে বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য সিয়ং খুমী, বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক মংনুচিং মারমা, গবেষণা কর্মকর্তা ক্যা ওয়াই ম্রো, ত্রিপুরা পরিচালক গাব্রিয়াল ত্রিপুরাসহ পাহাড়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে উৎসবে শুরুতে ম্রোলং পাড়া থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে অংশ নেন ম্রোলং পাড়া, বসন্ত পাড়া, নোয়াপাড়াসহ তিন পাড়া গ্রামের ৫০০টি পরিবার। নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে শোভাযাত্রায় যোগ দেন নারী–পুরুষ। পরে ম্রোদের তৈরিকৃত বিভিন্ন রকমের তৈরি পিঠা উপস্থাপন করা হয়। সভার আগে ম্রোদের ঐতিহ্যবাহী প্রুং পে প্রুং সুরের নৃত্য পরিবেশ করেন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. আতাউর রহমান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ পুরো বাংলাদেশে প্রায় ৫০টি জাতিগোষ্ঠীর ভাষা রয়েছে। সব জাতিগোষ্ঠীর ভাষা এক কাতারে আনার জন্য বর্তমান সরকার বড় পরিসরে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
অনুষ্ঠানে ম্রো জনগোষ্ঠীর লেখক ও গবেষক সিইয়ং ম্রো বলেন, জনসংখ্যায় বান্দরবান জেলায় ম্রো জনগোষ্ঠী এক লাখের বেশী। বসবাস করে থানচি, রুমা, আলীকদম ও চিম্বুকসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায়। জুম ও বিভিন্ন ফলাদি চাষ তাদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উপায়। জুম চাষ করে সারাবছর চলে তাদের সংসার। জুমের নতুন ফসল কিংবা নবান্নকে ম্রো ভাষায় বলা হয় ‘চাময়’। জুম থেকে যেসব নতুন ফসল উৎপাদিত হয় সেসব খাদ্য শস্যকে পাড়াবাসী মিলে জুম দেবতাদের মাঝে উৎসর্গ করা হয়।