জীববৈচিত্র্য সংকট : বিপন্ন প্রজাতির বাস্তবতা

রিজিয়া সুলতানা রিসপা | রবিবার , ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:২১ পূর্বাহ্ণ

প্রকৃতির এক অমূল্য রত্ন হলো জীববৈচিত্র্য। প্রাণী, উদ্ভিদ, মৃৎপদার্থের বৈচিত্র্য যা আমাদের পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করে। কিন্তু আজকের পৃথিবীতে, এই জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকিতে। বন উজাড়, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানুষের অবিবেচক কর্মকাণ্ডে বহু প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। বিশ্বজুড়ে বিপন্ন ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির সংখ্যা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৯ সালে প্রকাশিত ‘ইন্টারন্যাশাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার’(আইইউসিএন) এর রিপোর্ট অনুযায়ী, পৃথিবীতে ৮,৪০০ প্রজাতি প্রাণী ও উদ্ভিদ বিপন্ন অবস্থায় রয়েছে এবং ২৫,০০০ এরও বেশি প্রজাতি সংরক্ষণের প্রয়োজন। সুমাত্রান রাইজ এই বাঘটি বর্তমানে এটি অত্যন্ত বিপন্ন। এর সংখ্যা ৩৫০ এর নিচে নেমে এসেছে। পৃথিবীতে বর্তমানে ৫ প্রকার গণ্ডার রয়েছে, গণ্ডার ও সাদা গণ্ডার এখন বিপন্ন। গ্রেট অউটার পাখিটি এক সময় সাগরের উপরিভাগে বিস্তৃত ছিল এই, তবে ১৮৪৪ সালে এটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। আলবাট্রস ২১ প্রজাতির মধ্যে ১১টি বিপন্ন। এমন আরো নানা প্রাণী আছে।

বিশ্বজুড়ে বিপন্ন প্রজাতির রক্ষা করতে একাধিক আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় প্রচেষ্টা চলছে। আইইউসিএন এবং বিশ্ব বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ফান্ড এর মতো সংস্থাগুলি এই বিষয়ে কাজ করছে। উদাহরণস্বরূপ, আফ্রিকায় গণ্ডার সংরক্ষণ প্রকল্প এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়াতে সুমাত্রান বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প সফলতা পেয়েছে। প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য এবং জাতীয় উদ্যানগুলোও বিপন্ন প্রজাতির রক্ষা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশে, সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান একটি বিখ্যাত অভয়ারণ্য যেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সংরক্ষিত আছে। জীববৈচিত্র্য শুধুমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, আমাদের খাদ্য, ঔষধ, এবং অন্যান্য জীবিকা ব্যবস্থা সুরক্ষিত রাখার জন্য অপরিহার্য। জীববৈচিত্র্য হারানোর সাথে সাথে মানুষের জীবনযাত্রা, কৃষি, জলবায়ু এবং অর্থনীতি সম্পর্কিত নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে। জীববৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্য আমাদের ভূমিকা অপরিসীম। একদিকে আমাদের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি রক্ষা করতে হবে, অন্যদিকে আমাদের নিজেদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য পৃথিবীটিকে বাসযোগ্য রাখতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধহারিয়ে যাওয়া শৈশব
পরবর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে