সৌন্দর্য সাময়িক, কিন্তু সুন্দর চিন্তা দীর্ঘস্থায়ী। যোগ্যতা নিজের অর্জন। কিন্তু ব্যবহার সামগ্রিক বিষয়। সুতারং আপনার সুন্দর ব্যবহার, আন্তরিক মনোভাব, সহানুভূতি, সহমর্মিতা শ্রদ্ধাবোধই আপনার ব্যক্তিত্ব। আপনি কী হলেন, কতোটুকু সুন্দর, কী কী অর্জন করলেন এগুলো একটা সময়ের পর অস্থায়ী। কিন্তু আপনার বিগত দিনের সুন্দর সহমর্মি আচরণ আজীবন মানুষের অন্তরে আপনাকে চিরসুন্দর করে রাখবে। আপনার আই কন্টাক্ট, আপনার মৃদু হাসি বলে দেয় আপনি আরেকজনকে কতোটা মনোযোগ দিচ্ছেন।
এক জীবনে আমরা পরিবারের সকলকে নিয়ে সারাদিন কাটাই। কিন্তু বাইরের জগতের মানুষের সাথেও আমার এক ধরনের এটাচমেন্ট তৈরি হয়। সেই এটাচমেন্ট যদি স্বার্থ নির্ভর হয়, সুসময় নির্ভর হয় তা বেশিদিন টেকে না।
বা মনের ভেতর সেইরকম টানও কাজ করে না। কিন্তু নিঃস্বার্থভাবে যদি মানুষের সাথে মেশার মানসিকতা আপনার মধ্যে থাকে তাহলে আপনি সঠিকভাবে এগোচ্ছেন। মানুষ হয়ে সবার আগে মানুষের সাথে মিশতে হবে নাহলে আসলে জীবনে যাই হই সব বৃথা। ভালোগুলো আমরা মনে রাখি কম, মন্দে মন্দে অন্তরে জমাটবদ্ধ করে রাখি। তাই হয়তো মানুষের মুখে হাসি নেই আজকাল। মন থেকে মানুষের সাথে মিশতে পারলে আপনার মন ও আন্দোলিত হয়। মানুষের জীবনে সুখ থেকেও দুঃখ বেশি। এক জীবনে কয়দিন মানুষ বাঁচে আসলে? ক্ষমা করতে পারা, ভুলে যাওয়া ক্ষমা চাওয়ার মতো মানসিকতা সবার মধ্যে থাকে না। ইগো আমাদের অনেকটা শেষ করে দেয়। আমিও এর হয়তো পুরোপুরি বাইরে নই, আপনিও নন। কিন্তু যদি একবার ভাবি আজ আছি কাল নেই!
তখন মনে হয় সত্যি তো সবই তো অনিত্য। ক্ষমতা যেখানে সাময়িক সেখানে সৌন্দর্য, বিত্ত, বৈভব, সুনাম, পজিশন নিয়ে কখনো আর যাই হোক আমিত্ববোধে আক্রান্ত হওয়াটা বোকামি। জীবনে কোনো কোনো সময় বোকা হওয়া ভালো, বোবা হওয়া ভালো কানা হওয়া ভালো এবং সবার থেকে সবকিছু আশা না করাও ভালো। আশা দুঃখ বাড়ায়, আশা বিষয়টা একান্ত আন্তরিকতার খাতিরে আশা করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু আমরা অতি চালাকের গলায় দড়ি বেঁধে মরতে চাই না তাই জীবনে ঠেকে ঠেকে শিখে পথ চলাটাই হয়তো ভালো মনে করি অনেকেই। জীবন কী সুন্দর, আমরাই একে জটিলতা কুটিলতায় ভরিয়ে তুলি। মনের ভেতর কতো কী পরিষ্কার করার বাকী আমরা শরীর বুঝি মন বুঝি কম। মনের প্রসারতা উদারচিন্তার মনোভাব নিয়ে নিজেকে সমর্পিত করি।