আন্জুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় গতকাল শুক্রবার আওলাদে রাসুল (দ.), রাহনুমায়ে শরীয়ত ও ত্বরিকত, হযরতুলাহাজ্ব আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মাজিআ) এর খেতাবতে ও ইমামতিতে এবারের সফরের শেষ নামাজে জুমা চট্টগ্রাম ষোলশহরস্থ জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরীফের সাহেবজাদা হযরতুলহাজ্ব সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ্ (মাজিআ) নামাজ আদায় করেন। এরপর হাজার হাজার মুসল্লি সিলসিলায়ে আলীয়া কাদেরিয়া ত্বরিকায় দীক্ষিত হন।
নামায শেষে হুজুর ক্বিবলা তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজ আপনারা যে সিলসিলায় প্রবেশ করেছেন এটি সিলসিলায়ে আলীয়া কাদেরিয়া। যার সাথে গাউসে পাক হয়ে রাসূলে করিম (দ.) পর্যন্ত সম্পৃক্ত। এ সিলসিলাহ্ বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে প্রচার–প্রসারে হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.) এর অবদান অবিস্মরণীয়। আমরা ভাগ্যবান যে, সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.) ও সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহ.) এ সিলসিলাহ্ আনজুমান ও জামেয়া প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমাদের প্রতি বিশেষ করুণা করেছেন। সিলসিলায় প্রবেশের মাধ্যমে আমরা তাওবাহ্ করার সুযোগ পেয়েছি। যার মাধ্যমে আমাদের সকল গুনাহ্ মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ক্ষমা করবেন। তবে কারও উপর জুলুম করলে তা মজলুম ক্ষমা না করলে ক্ষমা হবে না।
তিনি আরও বলেন, সিলসিলা আদব ও শিষ্টাচারের জায়গা। ওয়াফাদারীর জায়গা। ইশ্ক ও মুহাব্বতের নাম তরিক্বত। আপনি তরিক্বতকে আন্তরিকতা ও ভালোবাসার সাথে গ্রহণ করেছেন। পরিশুদ্ধ মনে তাওবাহ্ করেছেন; আল্লাহ তার সকল পাপ মোচন করে দিবেন। তাওবার মাধ্যমে একজন মুসলমান পুনর্জন্ম নেন; যার মধ্যে কোনো পাপ থাকবে না। দুনিয়ার মোহ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবেন। আখেরাতের জন্য ফায়দা হাসিল হবে। তাতে আল্লাহ ও রাসুল (দ.) সন্তুষ্ট হবেন।
তিনি ভাইদের হজরাতে কেরামের পথ ও মতে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ পথ সহজ ও সরল পথ। আল্লাহর করুণাপ্রাপ্তদের পথ। যারা এ পথে চলেছেন তারা সফল হয়েছেন। তিনি বলেন, তরিক্বায় প্রবেশকালে আমরা ওয়াদা করেছি, ‘জীবনে এমন কাজ করবো না, যা করলে আল্লাহ–রাসুল (দ.) অসন্তুষ্ট হবেন। এমন কাজ করবো, যা করলে আল্লাহ–রাসুল (দ.) সন্তুষ্ট হবেন। তিনি বায়াতের এ প্রতিজ্ঞা মেনে চলার আহ্বান জানান। তিনি মুসলমানদের নামাজের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কোনো অবস্থায় নামাজ ত্যাগ করা চলবে না। তিনি মানুষের প্রতি ভালোবাসা, মানবতার ও পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শনের আহ্বান জানান। কারণ, সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ।
জুমার নামাজে উপস্থিত ছিলেন, আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মনজুরুল আলম মনজু (নবনিযুক্ত), সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, এডিশনাল সেক্রেটারি মুহাম্মদ সামশুদ্দিন, জয়েন্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ সিরাজুল হক, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি এস.এম. গিয়াস উদ্দিন শাকের, ফাইন্যান্স সেক্রেটারি কমর উদ্দিন সবুর (নবনিযুক্ত), প্রেস এন্ড পাবলিকেশন সেক্রেটারি মুহাম্মদ গোলাম মহিউদ্দিন (নবনিযুক্ত), আনজুমান ট্রাস্টের সদস্য– মাহবুবুল আলম, পেয়ার মোহাম্মদ, মুহাম্মদ নুরুল আমিন, মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, মুহাম্মদ তৈয়বুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, লোকমান হাকিম মোহাম্মদ ইব্রাহীম, আবদুল হামিদ, আবদুল হাই মাসুম, তসকির আহমদ, দায়েম নাজির জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া জামে মসজিদের মোতোয়াল্লী কামাল উদ্দিন চৌধুরী, আর.ইউ. চৌধুরী শাহীন, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের সদস্যবৃন্দ সহ লক্ষাধিক মুসল্লি।
দায়েম নাজির জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া জামে মসজিদের খতীব মাওলানা আবুল আসাদ মুহাম্মদ জুবাইর রজভীর সঞ্চালনায় এতে তাকরীর করেন হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ সোলায়মান আনসারী, অধ্যক্ষ (অব.) মুফতি অছিয়র রহমান আলকাদেরী, মাওলানা মোস্তফা রাহীম আযহারী, মাওলানা জয়নাল আবেদীন কাদেরী, ক্বারী মুহাম্মদ ইব্রাহীম।
উল্লেখ্য, সদ্য প্রয়াত আনজুমান ট্রাস্টের সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মরহুম আলহাজ্ব মোহাম্মদ মহসিনের কুলখানী উপলক্ষে আজ শনিবার বলুয়ার দীঘির পাড়স্থ খানকা শরীফে দিনব্যাপী খতমে কোরআন, খতমে গাউসিয়া শরীফ, মিলাদ–মাহফিলসহ বাদ এশা মেজবানের আয়োজন করা হয়েছে। হুজুর ক্বিবলা আওলাদে রাসুল পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ) এবং আওলাদে রাসুল সাহেবজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (মা.জি.আ) উক্ত খানক্বাহ্ শরীফে এশার নামাজ আদায় করবেন। পরে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ’র শান্তি, সমৃদ্ধি, উন্নতি ও বিশেষ করে সদ্য প্রয়াত মরহুম আলহাজ্ব মোহাম্মদ মহসিনের মাগফেরাত কামনায় দো’আ ও মুনাজাত পরিচালনা করেন হুজুর কিবলা আল্ল্ল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্্ (মা.জি.আ)। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।