জামিন মেলেনি আদম তমিজীর, দেরিতে আদালতে আনায় বিচারকের ক্ষোভ

| বৃহস্পতিবার , ১১ জানুয়ারি, ২০২৪ at ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ

সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজী হককে জামিন দেয়নি আদালত। ঢাকার মহানগর হাকিম আরফাতুল রাকিব গতকাল বুধবার শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন। আদম তমিজীর আইনজীবী আবদুল্লাহ আর মামুন সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তারের প্রায় ২০ দিন পরে তাকে আদালতে তোলা হয়েছিল। এতদিনেও আদম তমিজী হককে আদালতে হাজির না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারক।

এদিন আদম তমিজী হকের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, আদম তমিজী হক মানসিক রোগী। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ১১ ডিসেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মানসিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় তাকে সেখানেই চিকিৎসাধীন রাখা হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যুর আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করেন।

বিচারক জানতে চান, তাকে কি চিকিৎসাধীন অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়? আইনজীবী জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন আদালত জানতে চান, কোর্টে না এসে তিনি কিভাবে সেখানে ছিলেন? আইনজীবী জানান, তাকে আদালতে আনা সম্ভব ছিল না। আদালত বলেন, বাংলাদেশের একটা সংবিধান আছে। তাহলে সংবিধান ছিঁড়ে ফেলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর ১৫২০ দিনের মধ্যেও আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এতদিন সেখানে কীভাবে থাকেন? দেশে কি আইনআদালত নেই? এরপর আদালত আদম তমিজী হকের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।

পরে আদম তমিজী হকের আইনজীবী জানান, আইনের ব্যত্যয় ঘটায় আদালত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

ফেইসবুক লাইভে এসে পাসপোর্ট ছিড়ে ফেলাসহ অসংলগ্ন নানা আচরণে তুমুল আলোচিত বিস্কুট কোম্পানি এ টি হক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আদম তমিজী হককে গত ১০ ডিসেম্বর রাতে গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সে সময় বলেছিলেন, আদম তমিজীর বিরুদ্ধে দক্ষিণখান থানায় একটি মামলা হয়েছে। এছাড়া রমনা থানায় তার নামে পরোয়ানা রয়েছে। সব মিলিয়েই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গত ১৫ নভেম্বর দক্ষিণখান থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিছুর রহমান নাঈম। সেখানে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে নানা রকম বিরূপ মন্তব্য করেছেন তমিজী। তিনি জনশৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকলাপ, মিথ্যা আক্রমণাত্মক তথ্যউপাত্ত প্রচারের মাধ্যমে ‘প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি’ দিয়ে আসছেন। পরে ১০ ডিসেম্বর রাতে গ্রেপ্তারের পর আচরণ ও কথাবার্তা অসংলগ্ন মনে হওয়ায় তমিজীকে মাদক নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। আদালতে জানানো হয়, তমিজীর ‘এলোমেলো কথাবার্তায়’ ডিবির মনে হয়েছে, তার চিকিৎসা প্রয়োজন। পরে আদালতের নির্দেশে জাতীয় মানসিক হাসপাতালেও চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় তমিজী হককে। মানসিক হাসপাতালে নয়জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে একটি বোর্ডও গঠন করা হয়। গত ৪ জানুয়ারি আদম তমিজী হককে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশ্বসেরা গবেষকদের তালিকায় চবির ১৭৪ শিক্ষক
পরবর্তী নিবন্ধএলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখব: এমপি মোতালেব