কাল রাতে প্রচণ্ড ঝড় হয়েছিল। সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং–এর লনের জামগাছটা উপড়ে পড়ে গিয়েছিল। ভোরে মালি দেখল, গাছটার নিচে একজন মানুষ চাপা পড়ে আছে।
সে দৌড়ে গেল চাপরাশির কাছে। চাপরাশি ছুটে গেল ক্লার্কের কাছে। ক্লার্ক ছুটে গেল সুপারিনটেনডেন্টের কাছে।
সুপারিনটেনডেন্ট ছুটে এসে দেখলেন, উপড়ে পড়া গাছের নিচে একটা মানুষ চাপা পড়ে আছে, তার চারপাশে বেশ ভিড় জমেছে।
একজন ক্লার্ক আক্ষেপ করে বলল, “আহা, এই জামগাছে কত ফল ধরত।” আরেকজন ক্লার্ক তাকে মনে করিয়ে দিল, “আর এর জাম দারুণ রসালো ছিল।” তৃতীয় ক্লার্কটি বলল, “ফলের মরসুমে আমি ব্যাগ ভর্তি করে জাম নিয়ে যেতাম। আর আমার বাচ্চারা অনেক আনন্দে খেত।”
মালি গাছের নিচে চাপা পড়া মানুষটির দিকে ইশারা করে বলল, “আর এই মানুষটা?” “হ্যাঁ, এই মানুষ” সুপারিনটেনডেন্ট খুব চিন্তায় পড়ে গেলেন। একজন চাপরাশি বলল, “কে জানে বেঁচে আছে কিনা।” অন্য একজন চাপরাশি বলল, “সম্ভবত মারা গেছে। এত বড় গাছ যদি কোমরের ওপর পড়ে, মানুষ কি বাঁচে?” গাছের নিচে চাপা পড়া মানুষটি বেশ রুক্ষ স্বরে বলল, “না, আমি বেঁচে আছি।” কেউ একজন বিস্ময় প্রকাশ করে বলল, “আরে, এ বেঁচে আছে!”
মালি প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে বলল, “গাছটা সরিয়ে মানুষটাকে এখনই বের করতে হবে।” একজন ফাঁকিবাজ হৃষ্টপুষ্ট চাপরাশি ভারিক্কি ভঙ্গিতে বলল, “মনে হচ্ছে ব্যাপারটা অত সোজা নয়। গুঁড়িটা ভারী লাগছে।” মালি জিজ্ঞেস করল, “সহজ নয় কেন? সুপারিনটেনডেন্ট সাহেব যদি হুকুম দেন, তবে আমরা পনেরোবিশজন মালি, চাপরাশি আর ক্লার্ক মিলে অনায়াসে গাছটা সরিয়ে মানুষটাকে বের করে আনতে পারি।” বেশ কিছু ক্লার্ক মালিকে সমর্থন করে একসঙ্গে বলে উঠল, “হ্যাঁ, হ্যাঁ, মালি ঠিক বলছে। আমরা তৈরি, চল।” অনেকে গাছটা সরানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে গেল।
সুপারিনটেনডেন্ট হঠাৎ বাধা দিয়ে বললেন, “দাঁড়াও, আমি আগে আন্ডার সেক্রেটারির কাছে জিজ্ঞেস করে আসি।”
সুপারিনটেনডেন্ট গেলেন আন্ডার সেক্রেটারির কাছে। আন্ডার সেক্রেটারি গেলেন ডেপুটি সেক্রেটারির কাছে। ডেপুটি সেক্রেটারি গেলেন জয়েন্ট সেক্রেটারির কাছে। জয়েন্ট সেক্রেটারি গেলেন চিফ সেক্রেটারির কাছে। চিফ সেক্রেটারি গেলেন মিনিস্টারের কাছে। মিনিস্টার চিফ সেক্রেটারিকে কিছু বললেন। চিফ সেক্রেটারি জয়েন্ট সেক্রেটারিকে কিছু বললেন। একইভাবে জয়েন্ট সেক্রেটারি ডেপুটি সেক্রেটারিকে বললেন এবং ডেপুটি সেক্রেটারি আন্ডার সেক্রেটারিকে বললেন। ফাইল চলতে থাকল আর পার হয়ে গেল আধখানা দিন।
দুপুরের খাবারের পর গাছের নিচে চাপা–পড়া মানুষটির চারপাশে ভিড় আরও বেড়ে গেল। চারদিক থেকে নানা ধরনের কথা উঠতে লাগল। কিছু বিচক্ষণ ক্লার্ক নিজেরাই সমস্যার সমাধান বের করে ফেলল। তারা যখন অনুমতি ছাড়াই গাছ সরানোর পরিকল্পনা করছে, ঠিক তখনই সুপারিনটেনডেন্ট ফাইল হাতে দৌড়ে এলেন এবং বললেন, “আমরা নিজেরা এই গাছ সরাতে পারব না। কারণ আমরা বাণিজ্য দপ্তরের অন্তর্গত, আর এই গাছ কৃষি দপ্তরের আওতায় পড়ে। আমি এই ফাইলটিকে জরুরি হিসেবে চিহ্নিত করে এখনই কৃষি দপ্তরে পাঠিয়ে দিচ্ছি। ওদের উত্তর এলে আমরা গাছ সরাব।”
পরদিন কৃষি দপ্তর থেকে উত্তর এল, এই গাছ যেহেতু বাণিজ্য দপ্তরের লনে পড়েছে, তাই গাছ সরানোর দায়িত্ব বাণিজ্য দপ্তরের। এই উত্তর পড়ে বাণিজ্য দপ্তর খুব রেগে গেল। তারা সঙ্গে–সঙ্গে কড়া জবাব দিল, গাছ সরানো বা না সরানোর সম্পূর্ণ দায়িত্ব কৃষি দপ্তরের। বাণিজ্য দপ্তরের এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।
পরদিন আবার ফাইল চলতে শুরু করল। সন্ধ্যার সময় উত্তর এল, এই সমস্যা হর্টিকালচার ডিপার্টমেন্টে পাঠানো হচ্ছে কারণ এটা একটি ফলদ গাছ সংক্রান্ত বিষয়। কৃষি দপ্তর শাকসবজি এবং খেতখামারের সমস্যা নিয়ে কাজ করে। জামগাছ ফল দেয়। সুতরাং এই ধরনের ফলদ গাছ সংক্রান্ত ব্যাপার সম্পূর্ণভাবে হর্টিকালচার ডিপার্টমেন্টের অন্তর্গত।
সেই রাতে, মালি গাছের নিচে চাপা পড়া মানুষটিকে কিছু ভাত আর ডাল খাওয়াল। তার চারপাশে পুলিশের কড়া পাহারা বসানো হয়েছিল যাতে কেউ নিজের ইচ্ছেমতো গাছ সরানোর চেষ্টা না করে। কিন্তু এক সহানুভূতিশীল পুলিশ লোকটির ওপর দয়া করে মালিকে খাওয়ানোর অনুমতি দিল।
মালি মানুষটিকে বলল, “তোমার ফাইল চলছে। মনে হচ্ছে কালকের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত হবে।” চাপা পড়া মানুষটি কোনো জবাব দিল না।
মালি গাছটার দিকে ভাল করে তাকিয়ে বলল, “ভাগ্যিস এটা কোমরের এক পাশে পড়েছে। মাঝ বরাবর পড়লে তোমার মেরুদণ্ডটাই ভেঙে যেত।”
চাপা পড়া মানুষটি এবারও কোনো উত্তর দিল না।
মালি আবার বলল, “তোমার যদি কোনো পরিবারের ঠিকানা দাও। আমি খবর দেওয়ার চেষ্টা করব।” দীর্ঘক্ষণ চুপ থেকে মানুষটি বলল, “আমি বেওয়ারিশ।”
মালির খারাপ লাগল। সে চুপচাপ চলে গেল। পরদিন, হর্টিকালচার ডিপার্টমেন্ট খুব কড়া এবং ব্যঙ্গাত্মক জবাব পাঠাল।
হর্টিকালচার ডিপার্টমেন্টের সেক্রেটারি সাহিত্যপ্রেমী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি কবিতার ভঙ্গিতে লিখলেন, “এ এক বিস্ময়! যখন সমগ্র দেশ বৃক্ষরোপণে ব্যস্ত, তখনও এমন এক আইন রয়েছে আমাদের দেশে যার মাধ্যমে একটি গাছ কাটা যায়! তাও এমন একটি গাছ–ফলদ গাছ, যার ফল সবার প্রিয়। আমাদের দপ্তর কোনো অবস্থাতেই এই গাছ কাটার অনুমতি দিতে পারে না।”
একজন রসিক মানুষ দুঃখ করে বলল, “তাহলে কী করা যায়? গাছ যদি না কাটা যায়, তাহলে মানুষটাকেই কেটে ফেলি।” সে ব্যাখ্যা করল, “মানুষটাকে মাঝখান থেকে কেটে ফেললে অর্ধেক এদিকে, অর্ধেক ওদিকে বেরিয়ে আসবে। আর গাছটাও যেমন ছিল তেমনই থাকবে।”
গাছের নিচে চাপা পড়া মানুষটি প্রতিবাদ করে উঠল, “কিন্তু আমি তো মারা যাব!” একজন ক্লার্ক বলল, “হ্যাঁ, সেটাও ঠিক।” যিনি মানুষটিকে কাটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তিনি নতুন যুক্তি আনলেন: “তুমি জানো না প্লাস্টিক সার্জারি এখন কতদূর এগিয়েছে। আমরা যদি ওকে দু’ভাগে কেটে ফেলি, পরে আবার প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে জোড়া লাগানো যাবে।”
ফাইল পাঠানো হল মেডিকেল ডিপার্টমেন্টে। মেডিকেল ডিপার্টমেন্ট সঙ্গে–সঙ্গে ব্যবস্থা নিল। যেদিন ফাইল ওদের দপ্তরে পৌঁছাল, সেদিনই ওরা সেটা তাদের সবচেয়ে দক্ষ প্লাস্টিক সার্জনের কাছে পাঠাল। সার্জন মানুষটির স্বাস্থ্য, রক্তচাপ, নাড়ির গতি, হার্ট ও মাংসপেশি পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিলেন: “হ্যাঁ, প্লাস্টিক সার্জারি করা সম্ভব এবং তা সফলও হবে–কিন্তু মানুষটি মারা যাবে।”
সুতরাং এই সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হল না। সেই রাতে মালি লোকটিকে খিচুড়ি খাওয়ানোর সময় বলল, “তোমার ব্যাপারটা এখন ওপরমহলে গেছে। শুনেছি কাল সেক্রেটারিয়েটের সব সেক্রেটারিদের একটা মিটিং হবে। তোমার কেসটা সেখানে উঠবে। মনে হচ্ছে সব ঠিক হয়ে যাবে।”
চাপা পড়া মানুষটি গভীর শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে বলল, “জানি, তারা হয়তো আমাকে অস্বীকার করবে না। কিন্তু যখন সিদ্ধান্ত আসবে, তখন আমি ছাই হয়ে যাব।”
মালি হঠাৎ ঠোঁটে আঙুল রেখে বিস্ময়ে বলল, “তুমি তুমি কবি?”
মালি ধীরে মাথা নাড়ল। পরের সকালে সে কথাটা বলল চাপরাশিকে। চাপরাশি বলল ক্লার্ককে। ক্লার্ক বলল হেড ক্লার্ককে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই গোটা সেক্রেটারিয়েট জেনে গেল–গাছের নিচে যে মানুষটা চাপা পড়ে আছে, সে একজন কবি।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ল গোটা শহরে। সন্ধ্যার মধ্যে শহরের অলিগলি থেকে যত কবি ছিলেন, সবাই সেখানে হাজির হলেন। সেক্রেটারিয়েটের লন কবিতে কবিতে ভরে উঠল।
চাপা–পড়া মানুষটির চারপাশে তৈরি হল এক চমৎকার কবিসম্মেলনের পরিবেশ। সেক্রেটারিয়েটের কিছু ক্লার্ক এবং আন্ডার সেক্রেটারি–যাঁরা সাহিত্যচর্চা করতেন–তাঁরাও সেখানে দাঁড়িয়ে গেলেন। কিছু কবি চাপা পড়া মানুষটিকে তাঁদের কবিতা ও দোঁহা আবৃত্তি করে শোনাতে লাগলেন। আর কিছু ক্লার্ক তাঁকে অনুরোধ করলেন যেন সে নিজের কবিতা নিয়ে কিছু বলেন।
এই খবর যখন সেক্রেটারিয়েটের সাব–কমিটির কাছে পৌঁছাল, তখন তারা একটা সিদ্ধান্ত নিল: “যেহেতু চাপা–পড়া মানুষটি একজন কবি, তাই হর্টিকালচার বা কৃষি দপ্তর এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এ বিষয়টি পুরোপুরি কালচারাল ডিপার্টমেন্টের আওতাভুক্ত। কালচারাল ডিপার্টমেন্টকে অনুরোধ করা হচ্ছে যেন হতভাগ্য কবিকে তৎক্ষণাৎ ফলদ গাছের নিচ থেকে মুক্ত করা হয়।”
ফাইল ঘুরতে ঘুরতে কালচারাল ডিপার্টমেন্টের এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগ হয়ে সাহিত্য একাডেমির সেক্রেটারির টেবিলে গিয়ে পৌঁছাল। ঠিক তখনই ওই সেক্রেটারি সেক্রেটারিয়েটে এসেছিলেন, এবং গাছের নিচে চাপা–পড়া কবির সাক্ষাৎকার নিতে এলেন।
“তুমি কি কবি?” তিনি জিজ্ঞেস করলেন।
“হ্যাঁ।”
“তোমার নাম কী?”
“ওস।”
“ওস?” সেক্রেটারি অবাক হয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন, “তুমি সেই ওস–যার কবিতার বই ‘ওসের ফুল’ সমপ্রতি প্রকাশিত হয়েছে?”
“হ্যাঁ।”
“তুমি কি আমাদের একাডেমির সদস্য?”
“না।”
“কি আশ্চর্য! এত বড় কবি–আর তুমি আমাদের একাডেমির সদস্য নও! কী ভয়ানক ভুল হয়েছে! এমন এক প্রতিভাবান কবি অন্ধকারে, গাছের নিচে পড়ে আছে!”
“আমি নামে চাপা পড়ে নেই,” মানুষটি রুক্ষভাবে বলল, “আমি এক গাছের নিচে পড়ে আছি। দয়া করে আমাকে এখান থেকে তাড়াতাড়ি বের করুন।”
“হ্যাঁ, হ্যাঁ, অবশ্যই,” বলে সেক্রেটারি দৌড়ে তাঁর অফিসে গেলেন।
পরদিন সেক্রেটারি দৌড়ে কবির কাছে এলেন ভালো খবর নিয়ে: “অভিনন্দন! আমাদের সাহিত্য একাডেমি তোমাকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করেছে। এই নাও তোমার সদস্যপত্র।”
চাপা–পড়া মানুষটি বেশ কঠোর গলায় বলল, “আগে আমাকে গাছের নিচ থেকে বের করুন।” তার নিঃশ্বাস ধীর হয়ে গিয়েছিল। চোখে ছিল গভীর অসুস্থতা আর অসহায় যন্ত্রণা।
সেক্রেটারি বললেন, “এই বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। আমি যা পারি করেছি। তুমি যদি মারা যাও, তবে তোমার স্ত্রীকে পেনশন দেওয়া যাবে।” কবি থেমে থেমে বলল, “আমি এখনো বেঁচে আছি। আমাকে বাঁচতে দিন।”
হাত কচলাতে কচলাতে সেক্রেটারি বললেন, “দেখো, আমার দপ্তর কেবল সংস্কৃতির ব্যাপার দেখে। গাছ কাটাকাটি তো দোয়াত–কলমে হয় না–ওটা কুড়াল আর করাতের কাজ। আমি ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টে জরুরি চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি।”
সন্ধ্যাবেলা মালি চাপা–পড়া মানুষটির কাছে এসে বলল, “কাল ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের লোকেরা কুড়াল আর করাত নিয়ে আসবে। গাছটা কেটে ফেলবে। তুমি বেঁচে যাবে!” মালি বেশ খুশি ছিল। চাপা–পড়া মানুষটি ছিল ক্লান্ত। কিন্তু সে প্রাণপণে লড়ে যাচ্ছিল–কমপক্ষে আগামীকাল সকাল পর্যন্ত বাঁচার জন্য।
পরদিন, যখন ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের লোকেরা কুড়াল আর করাত নিয়ে গাছ কাটতে এল, তখন বিদেশ দপ্তর থেকে একটি বার্তা এল: “গাছ কাটার কাজ এখনই বন্ধ করা হোক। এই গাছটি দশ বছর আগে পিটোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী সেক্রেটারিয়েট পরিদর্শনের সময় লাগিয়েছিলেন। এখন যদি এটি কাটা হয়, তবে পিটোনিয়া সরকার অসন্তুষ্ট হতে পারে।”
একজন ক্লার্ক চেঁচিয়ে উঠল, “কিন্তু একজন মানুষের জীবন জড়িয়ে আছে এতে!”
আরেকজন ক্লার্ক বলল, “কিন্তু এটা তো দু–দেশের সম্পর্কের ব্যাপার। তুমি জানো না পিটোনিয়া সরকার আমাদের কত সাহায্য করে? আমরা কি বন্ধুত্বের খাতিরে একজন মানুষের জীবন উৎসর্গ করতে পারি না?”
“কবির মরে যাওয়া উচিত।”
“নিশ্চয়ই।”
আন্ডার সেক্রেটারি সুপারিনটেনডেন্টকে বললেন, “প্রধানমন্ত্রী আজ সফর শেষ করে ফিরছেন। বিকেল চারটায় বিদেশ দপ্তর গাছ সম্পর্কিত ফাইল তাঁর সামনে পেশ করবে। তিনি যা বলবেন, সেটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।”
বিকেল পাঁচটায় সেক্রেটারি ফাইল নিয়ে হাজির হলেন। “খুশির খবর!” তিনি ফাইল নেড়ে বললেন, “প্রধানমন্ত্রী গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছেন। তিনি সমস্ত আন্তর্জাতিক দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছেন। কালই গাছ কাটা হবে। তুমি বেঁচে যাবে! আজ তোমার ফাইল সম্পূর্ণ হয়েছে!”
কিন্তু কবির হাত তখন বরফের মতো ঠাণ্ডা। চোখ স্থির। এক সারি পিঁপড়ে ঢুকছিল তার মুখের ভেতর। তার জীবনের ফাইলটিও সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।