যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ‘দুর্নীতির মাধ্যমে’ গড়া সম্পত্তি জব্দ ও তদন্তের বিষয়ে কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থার প্রধানের কাছে জানতে চেয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত এমপি আফসানা বেগম। গত মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির মহাপরিচালক গ্রায়েম বিগারের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে এই সম্পত্তির ‘মালিক বাংলাদেশ’ হিসেবে উল্লেখ করে তা ফেরানোর কথাও বলেন তিনি। সাইফুজ্জামান চৌধুরীর এসব সম্পত্তি দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ার উদাহরণ হিসাবে ব্রিটিশ দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এবং আল–জাজিরার প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরেন আফসানা। খবর বিডিনিউজের।
পপলার অ্যান্ড লাইমহাউজ আসনের এমপি আফসানা বলেন, ‘এসব সম্পত্তির মালিকানা বাংলাদেশের এবং আমি বিশ্বাস করি, এগুলো বাংলাদেশের জনগণের কাজে লাগানোর জন্য ফেরত পাঠাতে হবে। এখন এমন এক সময়– যখন তারা গণতন্ত্র এবং তাদের নিজেদের স্বার্থে পরিচালিত হবে, এমন সমাজের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বাংলাদেশের জীবনমান, কর্মক্ষেত্রের অধিকার এবং গণতান্ত্রিক স্বাধীনতার উপরে দুর্নীতি অনেক দিন ধরে ক্ষতিকর প্রভাব রাখছে বলে বেশ তথ্য পাওয়া গেছে।’ গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল।
এর জবাবে কয়েক মাস পর আওয়ামী লীগের এ নেতা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, তার বাবা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু পাকিস্তান আমল থেকেই বিদেশে ব্যবসা করেন। তিনি সেই ব্যবসার উত্তরাধিকারী। যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সময়ও তিনি ব্যবসা করেছেন। যুক্তরাজ্যে তার আয়কর নথিও আছে।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী অবৈধ উপায়ে গড়া সম্পদ ফেরাতে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাওয়ার কথা তুলে ধরে আফসানা লেখেন, ‘এসব দুর্নীতির তদন্তের অংশ হিসাবে জনাব চৌধুরী এবং অন্যদের যুক্তরাজ্যভিত্তিক সম্পত্তি তদন্ত ও জব্দের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেটা আপনি খোলাসা করলে কৃতজ্ঞ থাকব। আমি নিশ্চিত আপনি একমত হবেন যে, এই সম্পর্কিত অর্থ জব্দ ও প্রত্যাবাসন কেবল বাংলাদেশের ন্যায়বিচার ও জনগণের ভবিষ্যৎ অধিকারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং যুক্তরাজ্যের সুনাম এবং আন্তর্জাতিক অবস্থানের জন্যও অপরিহার্য।’
ব্রিটিশ এমপি আফসানা লিখেছেন, সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে কর জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং সংস্থাটি দাবি করেছে যে, তিনি যুক্তরাজ্যে কোটি কোটি ডলার পাচার করেছেন।
তিনি লেখেন, এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি ও ইউকে কোম্পানিজ হাউজ পর্যালোচনা করে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস পেয়েছে, চৌধুরীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ১৫ কোটি পাউন্ডের অন্তত ২৮০টি সম্পত্তি অর্জন করেছে। আল–জাজিরার এক তদন্ত প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, আমার নির্বাচনী আসন পপলার অ্যান্ড লাইমহাউজে ৭৪টি সম্পত্তির মালিক জনাব চৌধুরী।