বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আয়োজিত জাতীয় ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় স্তরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দল। ফলে পরের মৌসুমে প্রথম স্তরে খেলবে চট্টগ্রামে দেশের প্রথম শ্রেণির এই ক্রিকেট লিগে। নিজেদের মাঠে রাজশাহী বিভাগের ম্যাচটি খেলতে নামার আগেই একরকম চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা নিশ্চিত ছিল চট্টগ্রামের জন্য। রাজশাহীর কাছে একেবারে হতশ্রীভাবে না হারলে আর খুলনা যদি অনেক বড় ব্যবধানে না জেতে তাহলে চট্টগ্রামের চ্যাম্পিয়ন না হওয়ার কোন কারণ ছিলনা। তবে সে সব সমীকরণ খুঁজতে দেয়নি চট্টগ্রামের ক্রিকেটাররা। শান্ত–মুশফিকদের রাজশাহীকে ১০ উইকেটে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করল চট্টগ্রাম। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচের দ্বিতীয় দিনেই চট্টগ্রামের জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা রাজশাহী ৯৯ রান তুলতে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল । তৃতীয় দিনে ২ রানে পিছিয়ে থেকে আবার ব্যাট করতে নেমে এক ঘন্টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ।
আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার সাব্বির রহমান এবং সানজামুল ইসলাম দিনের খেলা শুরু করেন। দিনের চতুর্থ ওভারেই হাসান মুরাদের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেন সাব্বির রহমান। তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করছিলেন সানজামুল। ৫ ওভার পর মোহর শেখকেও ফেরান হাসান মুরাদ। আর এর ফলে ইনিংসে ৫ উইকেট তুলে নেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট দলে ডাক পাওয়া এই স্পিনার। সাকলাই সজিবকে বোল্ড করে ফেরান পেসার হাসান মাহমুদ। শেষ উইকেট হিসেবে নাহিদ রানাকে ফিরিয়ে রাজশাহীর ইনিংস ১২৪ রানে থামিয়ে দেন নাঈম হাসান। ৩৬ রানে াপরাজিত ছিলেন সানজামুল ইসলাম। চট্টগ্রাম বিভাগের পক্ষে হাসান মুরাদ ৫ উইকেট নিয়েছেন ৪২ রানে। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ফলে ম্যাচ সেরাও নির্বাচিত হন এই স্পিনার। হাসান মাহমুদ এবং নাঈম হাসান নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। রাজশাহী বিভাগকে ১২৪ রানে অল আউট করে দেওয়ায় জয়ের জন্য চট্টগ্রামের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ২৪ রানের। চট্টগ্রামের দুইি ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় এবং পারভেজ হোসেন ইমন মিলে মাত্র ১৪ বলে জয় তুলে নেয়। জয় ১১ বলে ৩টি চার এবং একটি ছক্কার সাহায্যে ২১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ইমন অপরাজিত থাকেন ২ রান করে। ফলে ১০ উইকেটের জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া উদযাপন করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দল। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী চট্টগ্রামের মোমিনুল হক। পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা এবং একটি ট্রফি। সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক চট্টগ্রামেন নাঈম হাসান। তিনি ৬ ম্যাচে নিয়েছেন ৩৬ উইকেট। পুরস্কার হিসেবে নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং ট্রফি পেয়েছেন। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মনির–জহির এওয়ার্ডও পেয়েছেন চট্টগ্রামের নাঈম হাসান। পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন নগদ দুই লক্ষ টাকা। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হাসান মুরাদ পেয়েছেন নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং ট্রফি। আর উইনিং দল হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দল পেয়েছে ট্রফি এবং নগদ ৭ লক্ষ টাকা। এছাড়া ম্যাচ উইনিং বোনাস মানি হিসেবে চট্টগ্রাম দল পেয়েছে নগদ ৭৫ হাজার টাকা। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম বিভাগীয় দলের অধিনায়ক এবং কর্মকর্তাদের হাতে ট্রফি তুলে দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সহ সভাপতি আলহাজ আলি আব্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক সিরাজুদ্দিন মোঃ আলমগীর। এসময় ম্যাচ রেফারী এনাদুল হক মনি, জহার আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার ফজলে বারী খান রুবেল সহ দু দলের খেলোয়াড় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আগামী মৌসুমে জাতীয় লিগের প্রথম স্তরেও নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স অব্যাহত রাখতে চায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় দল।