জাতিকে পথ দেখাবে গণঅভ্যুত্থানের চেতনা

বইমেলায় উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ

ধীরে ধীরে জমে উঠছে চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলা। লোক সমাগম বাড়ার পাশাপাশি বিক্রিও বাড়তে শুরু করেছে। প্রকাশক, স্টল মালিকরা বলছেন লোক সমাগম বেড়েছে, সেই অনুযায়ী বিক্রি কম তবে বিক্রি আগের চেয়ে বেড়েছে। বিক্রি আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছেন স্টল মালিকরা। গতকাল ছিল চট্টগ্রামে অমর একুশে বইমেলার অষ্টমদিন। এর আগের শনিবার নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠে অমর একুশে বইমেলা শুরু হয়। বইমেলা চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ২৬ দিনের এ বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চট্টগ্রামে বইমেলার অষ্টম দিনে ‘সমাজ বিনির্মাণে জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রেরণা যোগাবে’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা বীর প্রতীক ফারুকআজম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের পায়ের নিচে ছিল অবারিত বাংলা। শত্রু ছিল বাইরে। শত্রু সশস্ত্র ছিল আমরাও সশস্ত্র ছিলাম। আর এবারের এই জুলাই অভ্যুত্থানের সংগ্রাম ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে। নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে। অসাম্যের বিরুদ্ধে। অহংকারঅন্ধত্বের বিরুদ্ধে। যে লড়াই লড়েছে সে লড়াই ছিল নিজের সাথে নিজের লড়াই।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আমরা কথা দিচ্ছি আগামীতে এটা একটা লেখক নির্ভর বইমেলা হবে। আমরা বাংলাদেশের সব লেখককে ইনভাইট করব এবং তাদেরকে আমরা বলব যে তাদের বইগুলো যাতে তারা এখানে তারা ডিসপ্লে করে। আমরা চেষ্টা করছি একটা নতুন কিছু করতে। ভবিষ্যতে আরো গোছালো, বৃহৎ পরিসরের বইমেলার আয়োজন করা হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্‌ইয়া আখতার বলেন, দেশকে বদলানোর ১৯৭১ সালে একবার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা আমাদের অনৈক্য দিয়ে, আমাদের বিভক্তি দিয়ে, আমাদের চুরি, লুটপাট, ডাকাতি দিয়ে সেই সুযোগ অবহেলায় হারিয়েছে। আবার আমাদের ছাত্র সমাজ আরেকবার নিজেদের জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে আমাদেরকে সমাজ বিনির্মাণের আরেকটা সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগ যদি আবার আমরা হারাই, তাহলে জাতিকে খেসারত দিতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক পূর্বকোণের পরিচালনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ইমরান বিন ইউনুস, শাহাবুদ্দিন বাবু।

এদিন বইমেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলায় অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। বই দেখছেন কেউ পছন্দের বই কিনছেন। এমেলিয়া প্রকাশনীর সত্তাধিকারী আফছার উদ্দিন লিটন বলেন, মানুষ আসছেন দেখছেন। আগের চেয়ে মেলায় লোক সমাগম বেড়েছে। তবে সেই তুলনায় বিক্রি নেই। আশা করছি কিছুদিন পর মেলা জমবে। আবার অনেকে এসে দেখে তালিকা করে যান। বইমেলার শেষের দিকে সেসব বই কিনেন। তিনি বলেন, আমাদের স্টলে দুদক নিয়ে জনগণের ভাবনা, কবিতা চাই না ও অন্যান্য রচনা; বই দুইটি বেশি বিক্রি হচ্ছে। ঢাকার স্টুডেন্টওয়েজ প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী মিলন বলেন, আজ (শনিবার) পাঁচটি বই বিক্রি হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) ১৫টি বই বিক্রি হয়েছে। আগের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে। আশা করি কিছুদিন গেলে আরও বিক্রি বাড়বে। মেলায় এসেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার রাকিব ও সিফাত আরা ইসলাম। বইমেলা ঘুরে খুবই ভালো লাগার অনুভূতি জানিয়েছেন এ দুই শিক্ষার্থী। দুজনে কিনেছেন তিনটি বই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আলোচনায় বসতে চায় সরকার
পরবর্তী নিবন্ধআমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেব না : রিজভী