বাংলার চারিপাশে বইছে বর্ষার প্রলয়নৃত্য। ঝড়–বৃষ্টির সাথে হানা দিয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আরেকটি অংশ বন্যা। যার কারণে অস্থির হয়ে পড়েছে বাংলার মানবজাতিসহ সমস্ত প্রাণীকূল। বন্যার জলে যখন একটা কোলের শিশুর ভেসে যাওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে তখন একজন মানুষ হিসেবে হৃদয়টা বেদনায় ভরে ওঠে। সারাদিনের পরিশ্রমের পর যে শান্তির নীড়ে মানুষজন একটু আরাম করে, সেই গৃহের ছাউনির উপর দিয়ে যখন বন্যার পানি প্রবাহিত হয় তখন জনমনের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছানোর যে আত্ম চিৎকার তা প্রতিটি মানবের হৃদয়কে দুর্বল করে তোলে। হয়তো এই দুর্যোগ প্রকৃতির সৃষ্ট, যাকে আয়ত্তে আনা আমাদের সাধ্যের বাইরে কিন্তু এমন দুর্বিষহ দিনে আমরা মানুষ হিসেবে আমাদের মানবতাকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারি না। তাইতো এই বাংলার দেশপ্রেমিক মানুষগুলো এগিয়ে আসে যার যে সামর্থ্য আছে তাই দিয়ে নিজের মানবতার ধর্ম পালনের উদ্দেশ্যে। একজনকে দেখে এগিয়ে আসে শতজন, আর শতজন থেকে হাজার জন এভাবে লক্ষ জন এগিয়ে আসতে উৎসাহিত হয় মনুষ্যত্ববোধের বিবেক থেকে। আর এভাবে তৈরি হয় একটি মানবতার ঘর, যে ঘরের প্রতিটি দেওয়াল হয় মানবতার ইট–পাথরের তৈরি। কথায় আছে, ‘একের বোঝা, দশের লাঠি’। তাই আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে মানবতার স্বার্থ রক্ষার্থে। প্রকৃতির এই প্রলয়কালে আমাদের ভুলে যেতে হবে সমস্ত শত্রুতা, জাতিভেদ, ধর্মভেদ এবং বৈষম্যতা। সকল বিভেদ ভুলে গিয়ে একত্রিত হয়ে হতে হবে বিপদের সম্মুখীন। হৃদয়ে জাগিয়ে তুলতে হবে মনুষ্যত্ববোধ, খুলে দিতে হবে মানবতার দুয়ার। তবেই আমাদের জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধিত হবে।