আগামী আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষে এবারো চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে জশ্নে জুলুস। প্রতিবছর এটি আয়োজন করে আসছে আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট। হিজরি সনের রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ মহানবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সা.) এর জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদযাপিত হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে দিবসটিকে উদযাপনের জন্য আনজুমান ১৯৭৪ সাল থেকে চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম ‘জশনে জুলুস’ আরম্ভ করে। যা বর্তমানে সারাদেশে বহুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অধিকাংশ সুন্নি সূফী ঘরানার প্রতিষ্ঠান এবং দরবারেও এ আয়োজন অনুসৃত হয়ে আসছে। আনজুমানের আয়োজনে এবারের জুলুসটি হবে ৫১ তম। গতকাল ২১ সেপ্টেম্বর দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জশ্নে জুলুসে ঈদ–এ–মিলাদুন্নবী (সা.) সফলকল্পে আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এবারের জশ্নে জুলুসে নেতৃত্ব দিবেন আওলাদে রাসুল, রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরিকত আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী, প্রধান মেহমান থাকবেন পীর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী এবং বিশেষ মেহমান থাকবেন সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসিম শাহ্ মাদ্দাজিল্লুহুল আলী। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় ষোলশহরস্থ আলমগীর খানকাহ শরীফ থেকে এ জুলুস বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা সংলগ্ন জুলুস ময়দানে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) মাহফিলে অংশগ্রহণ, সালাতু সালাম ও মোনাজাত শেষে জুলুসের সমাপ্তি হবে।
এর তিনদিন আগে ২৫ সেপ্টেম্বর, ৯ রবিউল আউয়াল রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুরস্থ কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া মাদ্রাসা থেকেও জুলুস বের করা হবে।
লিখিত বক্তব্যে আসন্ন জশনে জুলুসকে সফল করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করে বলা হয়, দীর্ঘ পাঁচ দশকে জশনে জুলুস শুধু বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদে উদযাপন হচ্ছে তা নয়; বরং বিশ্বেও শতাধিক রাষ্ট্রে এখন মিলাদুন্নবী উদযাপনে অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হয়েছে জশনে জুলুস। এ পবিত্র মহা আয়োজন যাতে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ হয়, এ জন্য গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ এবং আনজুমান সিকিউরিটি ফোর্সের অন্তত পাঁচ হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক সমগ্র জুলুসে দায়িত্ব পালন করবেন।
আনজুমান ট্রাস্ট আয়োজিত জশনে জুলুসটি বর্তমানে চট্টগ্রামের ইতিহাস–ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে গণ্য হচ্ছে জানিয়ে মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ পুরো বছর ধরে অপেক্ষায় থাকে কখন আবারো ফিরে আসবে ১২ রবিউল আউয়াল। তিনি চট্টগ্রামবাসীর সার্বিক সহায়তা কামনা করে বলেন, আমরা আশা করছি পুলিশ প্রশাসন আমাদের সাথে থাকবে। আমরা এই বিশাল জশনে জুলুসে আগতদের সেবায় জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, ওয়াসা, বিদ্যুৎ, পরিবহন সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করছি। বিশেষত, জুলুসে গমনের সড়কপথে যেন কোনো বিপদ না ঘটে সেজন্য নালা–নর্দমার উপরিভাগ উন্মুক্ত যেন না থাকে সে বিষয়ে আমরা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। একই সাথে জুলুসের প্রচার ও প্রসারে বরাবরের মত গণমাধ্যমগুলোর আন্তরিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন কেন্দ্রীয় গাউসিয়া কমিটির যুগ্ম মহাসচিব এড. মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আনজুমান–এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের এডিশনাল জেনারেল সেক্রেটারি ও জুলুস সাব–কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ সামশুদ্দিন, ফাইন্যান্স সেক্রেটারি মুহাম্মদ এনামুল হক বাচ্চু, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম, গাউসিয়া কমিটির কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান পেয়ার মোহাম্মদ (সাবেক কমিশনার), জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল মহসিন মো. ইয়াহিয়া খাঁন, অধ্যক্ষ আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ আবদুল আলীম রেজভী, পিএইচপি ফ্যামিলির প্রতিনিধি মুহাম্মদ দিলশাদ, মহানগরের সহ–সভাপতি ছাবের আহমদ, সম্পাদক মাওলানা আবদুল্লাহ, উত্তর জেলার সম্পাদক এড. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলার সম্পাদক মাস্টার মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, মিডিয়া কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, মুহাম্মদ মনছুরুর রহমান, আ ন ম তৈয়ব আলী, সাইফুল আলম সিদ্দিকী, আহসান হাবীব চৌধুরী হাসান, আবু নাসের রনি, এরশাদ খতিবী প্রমুখ।