লোহাগাড়ার আমিরাবাদ স্কুল রোডের বেহাল দশায় শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্তমানে উক্ত সড়কের সিংহভাগ অংশ চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় একাধিক গর্ত। অনেক স্থানে ছোটখাটো পুকুর তৈরি হয়ে আছে। সেই জল-কাদা ডিঙিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের উপজেলা সদর বটতলী স্টেশন থেকে আমিরাবাদ স্কুল রোডটি লোহাগাড়া-সাতকানিয়ার সীমান্তবর্তী স্থান তিন খালের মুখ পর্যন্ত বিস্তৃত। উক্ত সড়ক দিয়ে প্রতিদিন দুই উপজেলার প্রায় শতাধিক গ্রামের স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক ও ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ চলাচল করেন। এছাড়া সড়কে রয়েছে দক্ষিণ সাতকানিয়া গোলামবারী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, আমিরাবাদ সুফিয়া আলীয়া মাদ্রাসা, আমিরাবাদ জনকল্যাণ বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমিরাবাদ জনকল্যাণ মোমেনা কুলসুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আমিরাবাদ নতুন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আরো একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন থেকে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন বহু ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশাসহ মালবাহী ছোট-বড় ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সরেজমিনে দেখা যায়, সংস্কারের অভাবে সড়কের সিংহভাগই খানাখন্দে ভরে গেছে। ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহন চলছে এঁকেবেঁকে। গর্তের অনেক স্থানে পানি জমে আছে। আবার অনেক জায়গায় গাড়ি চলার সময় আশপাশ ধুলাময় কোথাও কাদাময় হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে চলতে পথচারীদের বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ব্যাটারিচালিত রিকশা চালক কবির আহমদ জানান, সড়কের বেহাল দশার কারণে রিকশা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ভাঙাছোঁড়া সড়কের কারণে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে রিকশার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। বিরক্তি প্রকাশ করেন যাত্রীরা। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় আবদুল মুবিন, মো. নোমান ও ফখরুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের গর্তে পানি জমে যায়। দূর থেকে দেখে মনে হয় সড়কের মাঝখানে ছোট পুকুর। এতে যানবাহন চলাচল দূরের কথা, পায়ে হাঁটাও কষ্টকর হয়ে পড়ে। এই সড়ক দিয়ে স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজগামী বহু শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। কিন্তু দীর্ঘদন যাবত সড়কটির কোনো সংস্কার না হওয়ায় জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
দক্ষিণ সাতকানিয়া গোলামবারী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সামশুল আলম জানান, আমিরাবাদ স্কুল রোডটি একেবারে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। তারপরও বাধ্য হয়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীরা এই সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। এছাড়া আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের ২টি কেন্দ্র রয়েছে এই সড়কে। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এসব কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী হয়ে আসবে। সড়কটি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে এলজিইডির লোহাগাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ইফরাদ বিন মুনীর জানান, বিষয়টি দেখে জানাতে হবে। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরে একটি কর্মশালায় আছেন। লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) এম. ইব্রাহিম কবির জানান, আমিরাবাদ স্কুল রোডটি সংস্কারের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে শীঘ্রই সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।