জলাবদ্ধতা নিরসনে নাগরিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন

নাছির খাল খনন কাজের উদ্বোধনকালে শাহাদাত

| বুধবার , ৮ অক্টোবর, ২০২৫ at ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সার্বিক সহযোগিতায় এবং চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি আলিফ উদ্দিন রুবেলের ব্যক্তিগত অর্থায়নে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে টাইগারপাসস্থ নাছির খালের খনন ও পরিচ্ছন্নতা কাজের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে যুবদলের উদ্যোগে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র জলাবদ্ধতা নিরসন, খালের দখলমুক্তকরণ, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম এবং নাগরিক সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উদ্বোধনী বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমার বর্তমান মূল ফোকাস হচ্ছে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা হ্রাস করা, বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলোতে। আমি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর জলাবদ্ধতা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে। এবারের বর্ষায় চট্টগ্রামবাসী আগের বছরের তুলনায় স্বস্তির মুখ দেখেছে। চলমান প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে আগামী বছর জলাবদ্ধতা নিরসনে আরও বড় পরিবর্তন দেখা যাবে।

নাছির খাল পুনঃখননের মতো উদ্যোগগুলোর উদ্দেশ্য উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এই ধরনের উদ্যোগগুলো শুধু উন্নয়ন নয়, বরং নাগরিক সচেতনতার অংশ। চট্টগ্রামকে সত্যিকারের ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসন শুধু সিটি কর্পোরেশনের কাজ নয়, এটি নাগরিক দায়িত্বও বটে। তিনি বলেন, এক সময় চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা ছিল এক অভিশাপ। এখন আমরা প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি। অবশিষ্ট অংশের সমাধানে খাল খনন, ড্রেন সংস্কার ও স্লুইচ গেট নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী বর্ষার আগেই নগরবাসী পরিবর্তনের বাস্তব চিত্র দেখতে পাবেন।

চট্টগ্রামকে একটি আধুনিক, স্বাস্থ্যসম্মত ও বাসযোগ্য নগরীতে পরিণত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামকে ক্লিন, গ্রিন, হেলদি ও সেফটি সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে হলে নগরবাসী, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। একটি নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও জলাবদ্ধতামুক্ত শহর গড়তে হলে সবাইকে সচেতন, দায়িত্বশীল ও সহযোগিতামূলক হতে হবে।

খাল দখল প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, খালের জায়গা দখল হয়ে গেছে, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে খালের মাঝেই বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়েছে। এতে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। জনগণের দুর্ভোগ কমানোর স্বার্থে যদি কোনো অবৈধ স্থাপনা থাকে, তা অপসারণ করতে আমরা বাধ্য হবো। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো নাগরিকদের জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে মুক্ত করা। নগরবাসীর প্রতি সচেতনতার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, শুধু খাল খনন করলেই জলাবদ্ধতা দূর হবে না। নাগরিকদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের অনেকের মনের মধ্যে ডাস্টবিনে ময়লা ফেলার সংস্কৃতি নেই। যত্রতত্র ময়লা, বিশেষ করে পলিথিন ও প্লাস্টিকজাত বর্জ্য খালে ফেলা বন্ধ করতে হবে। এগুলো অপচনশীল, ফলে খালের তলদেশে স্তর জমে পানি প্রবাহ বন্ধ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, উপ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি আবু বক্কর, ইয়াকুব আলী সিফাত, গাজী শওকত, নজরুল ইসলাম, মহানগর যুবদল নেতা মো. জাবেদ, সরকারি আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমৃত্যু ছাড়া মানুষের ‘সেইফ এক্সিট’ নেই, উপদেষ্টাদের উদ্দেশে সারজিস
পরবর্তী নিবন্ধআবরার ফাহাদের আত্মত্যাগই জুলাই অভ্যুত্থানের সিঁড়ি : সালাহউদ্দিন