জলবায়ু ঝুঁকি কমাতে কমনওয়েলথের অগ্রণী ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী

| মঙ্গলবার , ২৫ মে, ২০২১ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

টেকসই ও প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়তে কমনওয়েলথকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার গণভবনে থেকে এশিয়া অঞ্চলের কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের এক ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তব্যে এই আহ্বান জানান তিনি। কমনয়েলথ প্রধান ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বড় ছেলে প্রিন্স চার্লস এই সভা আহ্বান করেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য টেকসই এবং প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের জন্য কমনওয়েলথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কমনওয়েলথ সদস্য দেশ এবং ক্লাইমেট ভালনারেইবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনকে সামনে রেখে কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
কার্যকর এবং দক্ষ উপায়ে আরও বেশি স্থিতিশীল ও উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন গড়তে বিশ্বজুড়ে সবুজ ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সম্পদের পুনর্ব্যবহারে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে কমনওয়েলথ সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞান ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিধানসহ কার্বন নিরপেক্ষ প্রযুক্তির উপর জোর দেন তিনি। এছাড়া তিনি অভিযোজনে সহায়তা করতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে জলবায়ু অর্থায়ন করতেও আহবান জানান।
গৃহহীনদের আশ্রয় দেওয়ার দিকে সবাইকে মনোনিবেশ করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গৃহহীনদের আশ্রয় প্রদান, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগণের জলবায়ু ক্ষতি হ্রাসের সর্বোত্তম কৌশল। জলবায়ুর ক্ষতি প্রশমন এবং অভিযোজনের ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের প্রশংসিত হওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং সম্পদের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ বিশ্বে ‘অ্যাডাপটেশন লিডার’ হিসেবে আর্বিভূত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতি বছর জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজন ব্যবস্থার জন্য নিজস্ব সম্পদ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত ফোরাম-সিভিএফের চেয়ারম্যান এবং জিসিএর দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের ‘হোস্ট’ হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা এবং স্থানীয়ভাবে অভিযোজন সমাধান এবং নদীভাঙনে ঘরহারা মানুষদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে তার সরকার। কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং বৃক্ষরোপণসহ জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকারের নানা উদ্যোগও তুলে ধরেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশ ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি ইনিশিয়েটিভ’ গ্রহণ করেছে। এই উদ্যোগের আওতায় বাংলাদেশ কম কার্বন নিঃসরণ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন এবং ৩০ মিলিয়ন বৃক্ষরোপণ করতে যাচ্ছি। করোনাভাইরাস মহামারীর প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, গোটা বিশ্ব অভূতপূর্ব এবং অনিশ্চিত এক মহামারী পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও পরিস্থিতি একই। স্বাস্থ্য সঙ্কটের বাইরেও এই মহামারী আরও যে অনেক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে তা তুলে ধরে তিনি বলেন, যার জন্য আমার সরকার জীবন ও জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে নীতি এবং ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ এই মহামারীর ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমিত করে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচকরিয়ার জন্য থাকবে আলাদা ট্রেন
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা