আবারো জয়ের ধারায় ফিরল চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল। সিলেটে নিজেদের শেষ ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের কাছে হারের পর গতকাল চট্টগ্রামে এসে আবার জয়ের ধারায় ফিরল বরিশাল। এবারের বিপিএলের একেবারে তলানির দল ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারিয়ে নিজেদের চতুর্থ জয় তুলে নিল বরিশাল। আর আগের ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ের পর আবার হারের বৃত্তে বন্দী হয়ে গেল ঢাকা। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচে ঢাকাকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে তামিম ইকবালের বরিশাল। এই জয়ের ফলে ৬ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে গেল চ্যাম্পিয়নরা। যে দুটি ম্যাচে হেরেছে বরিশাল সে দুই ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল রংপুর রাইডার্স। ঢাকার ব্যাটারদের দায়িত্বহীন ব্যাটিং এর পর বোলারদের সাদামাটা বোলিং বরিশালের জয়কে সহজ করে। দীর্ঘ দিন পর নিজের মাঠে খেলতে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল। তাই দর্শকরা এসেছিল মূলত তার খেলা দেখতে। হতাশ করেননি তামিম চট্টগ্রামের দর্শকদের। দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি করে দর্শকদের চাহিদা মিটিয়েছেন তামিম। খুব বেশি মার মার কাট কাট ব্যাটিং না করলেও দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছেন তামিম। তার সাথে প্রথম ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং করেন ডেভিড মালান। দু’জনের রসায়নে আরো একটি জয় বরিশালের। ম্যাচের টস জেতা ছাড়া আর কোন কিছুতেই এগিয়ে ছিল না ঢাকা। যার ফলে ৮ ম্যাচের ৭টিতেই হারতে হলো ঢাকাকে।
টসে জিতে ব্যাট করতে নামা ঢাকা ক্যাপিটালস শুরুটা ভালই করেছিল। কিন্তু হঠাৎ ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যায় ঢাকার ব্যাটিং। দুই ওপেনার তানজিদ তামিম এবং লিটন দাশ ৩১ রান যোগ করেছিলেন। ১৭ বলে ১৩ রান করা লিটনকে ফিরিয়ে ঢাকা শিবিরে প্রথম ধাক্কাটা দেন রিপন মন্ডল। আগের ম্যাচে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করা লিটন ফিরলেন টি–টোয়েন্টির সাথে বেমানান ব্যাটিং করে। ওয়ান ডাউনে নামা মুনিম শাহরিয়ার রানের খাতাও খুলতে পারলেন না। ৪ বল খেলে ফিরলেন ফাহিম আশরাফের বলে। নামিবিয়ান ব্যাটার জিন পেরি কোটজে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহর শিকার হয়ে। ৯ বলে ৮ রান করেন কোটজে। ৪৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে ঢাকা। এরপর বলতে গেলে দলকে একাই টেনেছেন তানজিদ তামিম। অপর প্রান্তে কেবলই ছিল আসা যাওয়ার খেলা। একটি ছক্কা মেরেই সাব্বির রহমানের দায়িত্ব যেন শেষ। অধিনায়ক থিসারা পেরেরা খেললেন দুই বল। এক ওভারেই সাব্বির এবং পেরেরা দুজনকে ফেরালেন তানভীর ইসলাম। অভিজ্ঞ মোসাদ্দেক আউট হলেন অবিবেচকের মত ১১ বলে ১১ রান করে। একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়া তানজিদ তামিমও দিলেন এক সময় রণে ভঙ্গ। তবে ততক্ষণে নিজের হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেছেণ এই ওপেনার। ৪৪ বলে ২টি চার এবং ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৬২ রান করে ফাহিম আশরাফের বলে ফিরেন তানজিদ তামিম। এরপর আফগান ক্রিকেটার ফরমান উল্লাহ লড়াই করেছেন কিছুক্ষণ। তার ১৬ বলে ২২ রানের ঝড়ে ১৩৯ রানে থামে ঢাকা ক্যাপিটালস। তখনো ৩ বল বাকি ছিল। ফরচুন বরিশালের পক্ষে ৩৯ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তানভীর ইসলাম। ২৩ রানে ২টি নিয়েছেন ফাহিম আশরাফ।
১৪০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় বরিশাল। আবারো ব্যর্থ হলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আবু জায়েদ রাহির করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরেন শান্ত ২ রান করে। এবারের বিপিএলে প্রথম খেলতে নামেন ইংলিশ হার্ড হিটার ব্যাটার ডেভিড মালান। তামিমের সাথে যোগ দিয়ে দলকে টেনে নিয়ে যান দ্রুত। দুজন মিলে ৮০ বলে ১১৭ রানের জুটি গড়েন। দল যখন জয়ের একেবারেই কাছে ঠিক তখনই ফিরেন তামিম। তবে তার আগে ৪৮ বলে ৬টি চার আর একটি ছক্কার সাহায্যে ৬১ রান করে আসেন তামিম। এরপর জাহানদাদকে নিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে ফিরেন ডেভিড মালান। এই ইংলিশ ব্যাটার অপরাজিত থাকেন ৪১ বলে রানে। তিনি চার মেরেছেন ৩টি আর ছক্কা মেরেছেন একটি। অপরদিকে ৪ বলে ২টি ছক্কার সাহায্যে ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন জাহানদাদ।