জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের দাবি সরকার মেনে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কাকরাইলে আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন বাজেট বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবিটি বাস্তবায়ন করা হবে। পাশাপাশি আবাসন সংকট মোকাবিলায় অস্থায়ী হল নির্মাণের কাজ দ্রুত শুরু হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, আমরা দিনভর বিষয়টি নিয়ে কাজ করেছি। ইউজিসি একটি পরিবারের মতো, একসঙ্গে সমাধান খুঁজছে। শিক্ষার্থীদের সকল দাবি বাস্তবায়নে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জবি শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ায় চলমান আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ড. রইছউদ্দীন বলেন, আমাদের দাবিগুলো যেহেতু মেনে নেওয়ায় হয়েছে তাই চলমান আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করা হলো। তবে দাবিগুলো বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে এই আন্দোলনের অভিজ্ঞতা থেকে আবার আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব। খবর বাসস ও বাংলানিউজের।
জবি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো ছিল– জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসনবৃত্তি ২০২৫–২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫–২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করা।
এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দাবি আদায়ে কাকরাইল মোড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাবেক–বর্তমান শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণে সমাবেশ শুরু হয়। শুক্রবার জুমার নামাজের পর দুপুর সোয়া ২টার দিকে এ সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন বিভাগের অ্যালামনাইরাও।
প্রসঙ্গত, তিন দফা দাবি আদায়ে গত ১৩ মে দুপুরে দাবি আদায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি দল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন–ইউজিসিতে যায়। কিন্তু সেখান থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ১৪ মে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। পরদিন ‘লং মার্চ টু যমুনা’ মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড় এলেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন অনেকে। এরপর থেকে কাকরাইল মোড় আটকে চলছে জবির শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি। যে কারণে ওই এলাকায় তীব্র যানজটের ভোগান্তিতে পড়ছেন নগরবাসী।