জন কিটস (১৭৯৫–১৮২১)। ইংরেজি সাহিত্যের একজন রোম্যান্টিক কবি। সৌন্দর্য আর তারুণ্য প্রতীক জন কীটস। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে শুরু হওয়া ইংরেজি সাহিত্যের রোমান্টিক ধারায় যে ক’জন কবি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন, তাদের মধ্যে অনন্য একজন জন কিটস। মাত্র ২৫ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেও তার অনন্যসাধারণ কল্পনাশক্তি, মনন ও সৌন্দর্যের প্রতি তীব্র আকর্ষণ দিয়ে এই সংক্ষিপ্ত জীবনকালকেই তিনি চিরস্মরণীয় করে গেছেন। জন কিটস ১৭৯৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ অক্টোবর লন্ডনের একটি আস্তাবলে জন্মগ্রহণ করেন। কিটস প্রথমে এনফিল্ডের একটা স্কুলে লেখাপড়া করেন। ১৬ বছর বয়সে কিটস এনফিল্ডের স্কুল ত্যাগ করেন। তরুণ বয়স থেকেই তার কবিতার প্রতি ঝোঁক ছিলো। তা সত্ত্বেও কিটস গাই হাসপাতালে চিকিৎসা বিদ্যায় শিক্ষা গ্রহণ করেন। সেখানে তার সাথে লেই হান্ট নামে এক প্রতিষ্ঠিত কবির সাথে পরিচয় ঘটে। লেই হান্ট কিটসের সাহিত্য কর্মের প্রশংসা করেন এবং তাকে সাহিত্য চর্চায় উৎসাহিত করেন। ১৮১৬ খ্রিষ্টাব্দে সে চিকিৎসা বিদ্যার পেশা ত্যাগ করেন এবং পরিপূর্ণ ভাবে কবিতায় মনোনিবেশ করেন।
১৮১৬ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে তার প্রথম বিখ্যাত কবিতা একটা সনেট ‘ অন ফার্স্ট লুকিং ইনটু চ্যাপম্যানস হোমার লিখিত হয়। এ সময় তিনি সাহিত্য ও কাব্যজগতের তদানীন্তন কয়েকজন দিকপালের সংশ্রবে আসেন। এদের মধ্যে ছিলেন কবি শেলী, লে হান্ট, ওয়ার্ডওয়ার্থ, চার্লস ল্যাম্ব এবং উইলিয়াম হেজলিট। ‘ওড টু অ্যা নাইট্যাঙ্গল’, ‘ওড অন অ্যা গ্র্যাসিয়ান ওরন’, ‘ওড অন অ্যা মেলানচলি’ প্রভৃতি তার সুবিখ্যাত কবিতা।
কিটসের প্রতিভার সম্যক স্ফুরণ ঘটেছে তার ওডগুলোর মধ্যে। কিটস যদি শুধু এ কবিতাগুলোই রচনা করতেন, তবুও ইংরেজি সাহিত্যের মর্যাদাসম্পন্ন একজন কবি বলে পরিগণিত হতেন। তার সমস্ত হৃদয়–মন ছিলো সৌন্দর্যের নন্দলোকে আবদ্ধ। তার সকল সৃষ্টিকর্মে তিনি সৌন্দর্য ও মাধুর্যের পূজারী ছিলেন। তার কাছে প্রকৃতির মাঝে লুকায়িত এই নিগূঢ় সৌন্দর্যের অস্তিত্ব ছিলো মহান সত্য। কিটস ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ ফেব্রুয়ারি রোমে মৃত্যুবরণ করেন।