ফটিকছড়ির সুয়াবিল ইউনিয়নের প্রত্যন্ত জনপদ হাজিরখীল। সুজলা সুফলা এই গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস হলেও দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলিতই থেকে যায় এই গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা। স্বাধীনতার ৫২ বছর পর গ্রামের প্রধানতম সড়ক ‘হাজিরখীল সড়ক’ এর নামে বিগত সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকার ২.৫০ কিলোমিটার আয়তনের কার্পেটিং উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ দেয়। বরাদ্দ অনুযায়ী হাজিরখীল সড়কের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর এলজিইডির অধীনে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা থাকলেও অজানা কারণে উদালিয়া চা বাগানের অভ্যন্তরীণ একটি সড়কে কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি জানতে পেরে বাগানের অভ্যন্তরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়ে জেলা প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয় এলাকাবাসী।
গতকাল শনিবার সকালে এলাকার শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে অবহেলিত হাজিরখীল সড়কের আইডি (৪১৫৩৩৪০০৭) অনুযায়ী আসা উন্নয়ন বরাদ্দে বাগানের অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। এতে স্থানীয় বাসিন্দা মহিউদ্দিন ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. আবু সৈয়দ বলেন, হাজিরখীল সড়কটি অনেক পুরনো। এই এলাকাটিও অনেক অবহেলিত। দীর্ঘদিন পর সড়কটি নির্মাণে বরাদ্দ আসলেও উদালিয়া বাগান কর্তৃপক্ষ বাগানের ভেতরের অভ্যন্তরীণ একটি সড়ক উন্নয়নের চেষ্টা করেন। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। মো. আজগর ও মো. শাহেদ বলেন, হাজিরখীল সড়কের উন্নয়নে আসা বরাদ্দে বাগানের ভেতর সড়ক করার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম জানান, বাগান কর্তৃপক্ষ তদবির করে হাজিরখীল সড়কটির নির্মাণ কাজ নিয়ে নেয়। এদিকে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজিরখীল সড়কটি পরিদর্শন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সুয়াবিল ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন। এসময় তিনি বলেন, সড়কটি একেবারেই চলাচল অনুপযোগী। জরুরি ভিত্তিতে এটির নির্মাণ কাজ করা দরকার। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে উদালিয়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক নাদিম হোসেন বলেন, বাগানের সড়কটিরও উন্নয়ন করা দরকার। এলাকাবাসীর দাবিও যৌক্তিক। জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, হাজিরখীলবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখন বাগানের ভেতরের সড়কের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।