জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস মাদক ও দুর্নীতি দমনে সক্রিয় ভূমিকা রাখুন

পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী

| বুধবার , ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতি দমনে পুলিশ বাহিনীকে জনগণের সেবা অব্যাহত রাখার এবং এজন্য সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি পুলিশ বাহিনীর সদস্যদেরকে বলবো আপনারা দেশের মানুষের সেবা করেন। দুষ্টের দমন শিষ্টের পালন, এটা হচ্ছে পুলিশের মূল মন্ত্র। কাজেই পুলিশ বাহিনী মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করবেএটাই সব সময় আমাদের কাম্য।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ছয় দিনব্যাপী ‘পুলিশ সপ্তাহ২০২৪’ এর উদ্বোধনকালে দেওয়া প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। তিনি বলেন, আজকে দেশের মানুষ পুলিশের প্রতি সে আস্থা রাখতে পারছে। কাজেই আপনারা আন্তরিকতার সাথে মানুষের সেবা করবেন, সেটাই আমরা চাই। খবর বাসসের।

সরকার প্রধান বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আর এই ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনীকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করতে হলে দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা একান্তভাবে অপরিহার্য।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ যখনই কোন বিপদে পড়ে তখনই আশ্রয় খোঁজে পুলিশের কাছে। কাজেই পুলিশ জনগণের বন্ধু, এটা সব সময় চলে আসছে এবং এটাকেই প্রতিষ্ঠা করা একান্তভাবে দরকার। সে কারণেই আমি মনে করি আমাদের পুলিশ বাহিনী তাদের সততা, পেশাদরিত্ব, নিষ্ঠা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, ত্যাগ, বীরত্ব, দেশপ্রেম ও মানবীয় মূল্যবোধ নিয়েই জনগণের সেবা করবেন। পুলিশ বাহিনীকে আমরা সেভাবেই গড়ে তুলছি। ১৯৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রথম পুলিশ সপ্তাহে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে জাতির পিতা প্রদত্ত ভাষণের উদ্ধৃতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তাদের জনগণের প্রতি ভালবাসা নিয়ে আরও একনিষ্ঠ হয়ে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘তোমরা স্বাধীন দেশের পুলিশ। তোমরা ইংরেজের পুলিশ নও। তোমরা পাকিস্তানি শোষকদের পুলিশ নও। তোমরা জনগণের পুলিশ। তোমাদের কর্তব্য জনগণকে সেবা করা। বাংলার মানুষ চায় তারা শান্তিতে ঘুমাক। তোমাদের কাছ থেকে আশা করে যে, চোর, বদমাশ, গুন্ডা, দুর্নীতিবাজ তাদের ওপর অত্যাচার না করে। তোমাদের কর্তব্য অনেক বেশি।’ শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার ভাষণের এই মর্মবাণী ধারণ করে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য গভীর দেশপ্রেম ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা নিয়ে কাজ করে যাবে, এই আমার প্রত্যাশা।

প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে চড়ে বাংলাদেশ পুলিশের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে বিভিন্ন পুলিশ বাহিনী বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী সাহসী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ৩৫ পুলিশ সদস্যকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএমবীরত্ব) এবং ৬০ জনকে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএমবীরত্ব) প্রদান করেন। এছাড়া ৯৫ জন পুলিশ সদস্য বিপিএম সেবা পদক এবং ২১০ জন পিপিএম সেবা পদক পেয়েছেন।

জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। শান্তি রক্ষায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করতে গিয়েও যেসব পুলিশ সদস্য জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের পুলিশ বাহিনী আরো দক্ষ, পেশাদার, যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানের একটি স্মার্ট সংস্থা হিসেবে গড়ে উঠবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। আর সেই কারণেই আপনাদের প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট অত্যন্ত জরুরি এবং সে ব্যাপারেও আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, আজকে আমি একটা কথাই বলতে চাই যে ১৫ বছর আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। প্রতিটি মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা আমরা করব। এটাই আমাদের লক্ষ্য, আর সেই লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রায় পুলিশ সদস্যরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিশেষ অবদান রাখবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদেশিদের বঙ্গবন্ধু টানেল দেখালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধবিদ্যুতের দাম বাড়ছে সর্বোচ্চ ৭০ পয়সা