ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু

পতেঙ্গা সৈকতে বিকট শব্দে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে মারামারি আরেকজন আহত, ৭ জন আটক

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১০ জুন, ২০২৪ at ৭:৩৭ পূর্বাহ্ণ

বন্ধুকে সাথে নিয়ে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে নতুন ভোরের প্রথম আলো উপভোগ করতে গিয়েছিলেন বন্দরটিলার মনিরুজ্জামান রাফি (২৫)। কিন্তু দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে জীবনের আলো নিভে গেল এ যুবকের। বিকট শব্দে মোটরসাইকেল চালানোকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটি ও মারামারির এক পর্যায়ে রাফিকে ছুরিকাঘাত করা হয়। গতকাল ভোরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গুরুতর আহত রাফির বন্ধু রায়হান (২৬) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় জড়িত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত রাফি বন্দরটিলার মো. রফিকের ছেলে। ইপিজেডের পোশাক তৈরির কারখানা ইয়ং ওয়ানে কাজ করতেন তিনি।

নিহতের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভোর ৪টার দিকে মোটরসাইকেলে করে কয়েকজন বন্ধুসহ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে যান রাফি। ফাঁকা সড়কে সাইলেন্সার পাইপের বিকট শব্দ করে মোটরসাইকেল চালান তারা। এ সময় স্থানীয় কিছু তরুণ বিকট শব্দে মোটরসাইকেল চালানো নিয়ে আপত্তি জানায়। এতে কথা কাটাকাটি হয় দুই পক্ষে; যা স্থানীয় লোকজন সমাধান করে দেয়। তবে স্থানীয় তরুণেরা প্রতিশোধ নিতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে আরো কয়েকজনকে নিয়ে আসে। তারা ওত পেতে থাকে বঙ্গবন্ধু টানেলের মুখে। রাফি ও তার বন্ধুরা ফেরার পথে ওই যুবকেরা হামলা করে। এ সময় উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে রাফি ও রায়হানকে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান রাফি। রায়হানকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করে তার বন্ধুরা।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রায়হান ও রাফির সঙ্গে মোটরসাইকেল নিয়ে আরো কয়েকজন বন্ধু ছিল। যারা হামলা করে তারাও সংঘবদ্ধ ছিল। ফাঁকা সড়কে উচ্চ শব্দে মোটরসাইকেল চালানোকে কেন্দ্র করে দুই দল প্রথমে কথা কাটাকাটি ও মারামারিতে জড়ায়।

গতকাল বিকালে পতেঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ভোর চারটা থেকে সাড়ে চারটার মধ্যে সমুদ্র সৈকত এলাকায় গোলচত্বরে দুই দল তরুণের মধ্যে মারামারি হয়। ভোর ৫টার দিকে খবর পেয়ে পতেঙ্গা থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ততক্ষণে স্থানীয় লোকজন আহত দুজনকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রাফি নামে একজনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আরেকজন গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। দুজন ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, একাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে সমুদ্রে সৈকতে বেড়াতে গিয়েছিল দুদল তরুণ। বাইকগুলোতে বিকট শব্দের সাইলেন্সার পাইপের পাশাপাশি হাইড্রোলিক হর্ন লাগানো ছিল। সাইলেন্সার পাইপের বিকট শব্দকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর মারামারি শুরু হয়। গত রাত পৌনে ১০টায় তিনি আজাদীকে বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।

নিহত রাফির বাবা মোহাম্মদ রফিক আজাদীকে বলেন, আমার ছেলে মোটরসাইকেলে করে বন্ধুবান্ধব নিয়ে সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যায়। সেখানে মোটরসাইকেলের হর্ন নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে, যা স্থানীয় লোকজন ও চা দোকানদাররা মিটমাট করে দেয়। পরে তারা এসে আমার ছেলেকে ছুরিকাঘাত করে। যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।

আহত রায়হান সাংবাদিকদের বলেন, ওরা ২০/৩০ জন একসাথে ছিল। আমাদের এলোপাতাড়ি মেরেছে।

সাতজন আটক : পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ঘটনায় জড়িত সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনের নাম পাওয়া গেছে। এরা হলেন শাহরিয়ার আহমেদ (২০), তাহরিয়ার আহমেদ বাঁধন (২০), জুবায়ের বাশার (৩৪) ও মারুফ চৌধুরী (২১)

পূর্ববর্তী নিবন্ধপটিয়ায় দুই ইউপি চেয়ারম্যানের অনুসারীদের মধ্যে গোলাগুলি
পরবর্তী নিবন্ধমা-বাবাই বিক্রি করেছিলেন দুই নবজাতককে