১৯৫২ সালের এদিনে ভাষা আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়তে থাকে সারা দেশে। ছাত্রসমাজের অগ্রণী ভূমিকার কারণে ভাষা আন্দোলন মারাত্মক আকার ধারণ করতে থাকে। ঢাকার বাইরে যেসব জেলা শহরে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল তাদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ অন্যতম। উত্তাল হয়ে উঠে বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জ। এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ছাত্ররা দল বেঁধে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার অন্দোলনে রাস্তায় নেমে পড়ে। ঢাকার মতো বিভিন্ন অঞ্চলে অল্পবয়সী ছাত্রছাত্রীরা একুশের প্রেক্ষাপট তৈরিতে স্কুল ছেড়ে পথে নেমেছে। মিছিলে স্লোগানে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে। এক অদ্ভুত আবেগ তাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।
ঢাকার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক যোগাযোগ বরাবরই নিবিড়। ব্রিটিশ শাসনামল পেরিয়ে পাকিস্তানেও তা একই রকম। একুশের নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, এখানকার শ্রমজীবী মানুষ একুশের ডাকে ছাত্রদের পাশে দাঁড়াবে। সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। শুধু নারায়ণগঞ্জ নয়, ছাত্রদের ডাকে একুশকে সফল করে তুলতে দেখা গেল শহরে শহরে, গ্রামে–গঞ্জে শিক্ষায়তন ঘিরে ছাত্রসমাজের প্রতিবাদী কর্মসূচির প্রস্তুতি। বেলতলার আহ্বান আর সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সমর্থন বৃথা যায়নি। একেকটি দিন যাচ্ছে আর প্রতিবাদী চিন্তার সাংগঠনিক প্রস্তুতি চলছে রাজশাহী, রংপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে দক্ষিণে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, বরিশাল, ফরিদপুর, খুলনা এবং উত্তর–পূর্বে সিলেট, ময়মনসিংহ, গারো পাহাড়ের হাজং এলাকা, মধ্যখানে কুমিল্লা এবং যশোর, বগুড়া, পাবনাসহ প্রায় সবখানে। ছাত্র–গণজাগরণ তুঙ্গে ওঠে।