শিশু আলীনা ইসলাম আয়াতের বাড়িতে এখনো চলছে শোকের মাতম। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে নিঃস্ব মা-বাবা। ১০ দিন ধরে নিখোঁজ আয়াত আর বেঁচে নেই। পিবিআই থেকে শুক্রবার সকালে এমন তথ্য পেয়ে আহাজারিতে ভেঙে পড়েন মা-বাবাসহ স্বজনরা।
আয়াতের চাচা জোবায়ের হোসেন বাবু বলেন, আয়াত ছিল আমাদের চোখের মণি। স্বভাবে চঞ্চল আয়াত সারা বাড়ি মাথায় করে রাখত। তার দুষ্টুমি, আবদার কত কিছু যে মনে পড়ছে! খুনি আবিরকে চাচ্চু ডাকত আয়াত। তার জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই আমাদের চোখের সামনে। একইভাবে পুরনো ভাড়াটিয়া হিসেবে আবিরের পরিবারের সাথেও আমাদের সম্পর্কটা বাড়ির মালিক আর ভাড়াটিয়ার মতো নয়। তার থেকে অনেক বেশি ছিল। সে কিনা খণ্ড-বিখণ্ড করে ফেলল আমাদের মামণিকে! তিনি বলেন, এখন একটাই চাওয়া; আয়াতকে তো আর ফিরে পাব না, তাকে যে এভাবে মেরেছে তার ফাঁসি চাই।
এদিকে আয়াত হত্যা মামলাটি নিয়ে শোরগোল চলছে। আয়াতের হত্যাকারী আবীর আলী পিবিআইয়ের হাতে ধরা পড়ার পরও থানায় আয়াতের পিতা মো. সোহেল রানার দায়েরকৃত মামলায় আসামি ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো ধোঁয়াশা নেই জানিয়ে ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম আজাদীকে বলেন, ১৫ নভেম্বর আয়াত নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবার থানায় একটি জিডি করেছিল। পাশাপাশি পিবিআইয়ের কাছেও আবেদন করেছিল। ইপিজেড থানা পুলিশ এবং পিবিআই পৃথকভাবে আয়াতকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। এরই মধ্যে পিবিআই ঘটনার একটি সূত্র ধরে আবির আলীকে ২৪ নভেম্বর রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরদিন অর্থাৎ দুপুর দুইটা পাঁচে আয়াতের বাবা সোহেল রানা আয়াতকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে একটি এজাহার জমা দেন থানায়। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, তার বাড়ির আশেপাশের মানুষ থেকে তিনি জেনেছেন যে, ঘটনার দিন উল্লেখিত সময়ে তারা দেখেছেন, আয়াতকে কোলে নিয়ে আদর করছে আবির। এজন্য তিনি সন্দেহ করছেন আবির আলী অজ্ঞাত সহযোগীদের সহায়তায় আয়াতকে অপহরণ করেছে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে।
ওসি বলেন, ধারণার ওপর ভিত্তি করে তো কাউকে আসামি করা যায় না। তাই আসামির স্থানে ‘অজ্ঞাত’ লেখা হয়েছে। মামলা রেকর্ডের পরে জানা যায় যে আয়াতকে হত্যা করেছে আবির। পিবিআই মামলাটির তদন্ত করছে। আসামিও তাদের হেফাজতেই আছে। থানায় জমা দেয়নি। তিনি বলেন, একটি পক্ষ কেন যে এটা নিয়ে শোরগোল করছে তা বুঝতে পারছি না।