করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে সময়টিতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল, সে সময় এটি নিয়ন্ত্রণে জোর প্রচেষ্টা শুরু করেছিল চীন। এ চেষ্টার বিরুদ্ধে ওই সময়টিতে আবার গোপন প্রচারণা শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। মূল উদ্দেশ্য ছিল ফিলিপাইনে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকিয়ে দেওয়া। কেননা সে সময়টিতে যে দেশগুলোয় করোনার ব্যাপক সংক্রমণ শুরু হয়, ফিলিপাইন ছিল অন্যতম। খবর বাংলানউজের।
শুক্রবার (১৪ জুন) মার্কিন সংবাদসংস্থা রয়টার্সের বিশেষ এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিপিনোদের ছদ্মবেশ ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। অ্যাকাউন্টগুলো থেকে চীনের তৈরি করোনার টিকা সিনোভ্যাক, মাস্ক ও করোনা পরীক্ষার সরঞ্জামের গুণগত মান নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়। এর সঙ্গে জড়িত ছিল মার্কিন সেনাবাহিনী।
যা পরে টিকাবিরোধী অভিযানে পরিণত হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স–এ (সে সময় টুইটার নাম ছিল) কমপক্ষে ৩০০ ভুয়া অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে। যা চীনের টিকা ও অন্যান্য জীবন রক্ষাকারী সহায়তা সম্পর্কে সাবেক মার্কিন সামরিক কর্মকর্তাদের শেয়ার করা বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়। প্রায় সবগুলো অ্যাকাউন্ট ২০২০ সালের মাঝামাঝি চীন ইজ দ্য ভাইরাস স্লোগানকে কেন্দ্র করে খোলা হয়েছিল।
অবশেষে ভুয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রচার প্রচেষ্টা একটি টিকাবিরোধী অভিযানে পরিণত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রচারণার উদ্দেশ্য ছিল চীনের সরবরাহ করা টিকা ও জীবন রক্ষাকারী অন্যান্য উপকরণের সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ ছড়িয়ে দেওয়া।
কারণ, সে সময়টিতে ফিলিপাইনে করোনার টিকাগুলোর মধ্যে সবার আগে পৌঁছেছিল সিনোভ্যাক। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এই গোপন অপারেশন নিয়ে আগে কোনো ধরনের প্রতিবেদন করা হয়নি। ২০২০ সালের জুলাই মাসে এঙ–এ পোস্ট করা হয়েছিল, কোভিড এসেছে চীন থেকে এবং ভ্যাকসিনও এসেছে চীন থেকে, চীনকে বিশ্বাস করবেন না!
এর সঙ্গে একটি ছবি জুড়ে দেওয়া হয়। যেখানে চীনা পতাকার পাশে একটি সিরিঞ্জ ও সংক্রমণের একটি ক্রমবর্ধমান চার্ট দেখা যায়। একই ধরনের আরও একটি পোস্ট দেওয়া হয় যেখানে–চীনের পিপিই, ফেস মাস্ক, ভ্যাকসিন ভুয়া, কিন্তু করোনাভাইরাস আসল বলে উল্লেখ করা হয়েছি। রয়টার্স এঙ–কে অ্যাকাউন্টগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। এরপর সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিটি প্রোফাইলগুলো সরিয়ে দেয়। এর অর্থ–এটি একটি সমন্বিত প্রচারের অংশ ছিল। মার্কিন সামরিক বাহিনীর ‘অ্যান্টি–ভ্যাঙ’ প্রচেষ্টা ২০২০ সালে শুরু হয়েছিল এবং ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে এটি শেষ হওয়ার আগে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বাইরে ছড়িয়ে পড়েছিল।