তোমায় আমি চেয়েছিলাম গাছের ছায়ার আড়ালে। চেয়েছিলাম দুপুরের আলস্যে, ঘুম ঘুম গল্পে। জানালার পর্দায় কদাচ ফোকর গলে সামান্য দ্বিধা সংকোচে সহাস্যে, মৃদু মিঠে হাওয়ার বাতায়নে। ঝুল বারান্দার গ্রিলে, লুকোচুরি খেলার মতো করে তোমায় চেয়েছিলাম অথবা আলো ছায়ার ঘর এঁকে, যেখানটাতে চড়ুইগুলো হৈচৈ করে এক্কা দোক্কা খেলে বেড়াবে খুব।
আমার এ কথাগুলো তোমার কাছে পৌছায়নি বুঝি! কথাগুলো লিখেছিলাম গাছের পাতায় বৃষ্টির অক্ষরে। পাতা ঝরলো, ডাল শুকালো, উপড়ে ফেলা হলো গাছ! তাই কি তোমার রাগ হয়েছে খুব! ভীষণ উত্তাপ ছড়াচ্ছো তুমি! তোমার রুদ্ররূপী প্রচণ্ডতায় আমি দিশেহারা, অসহায়, মৃতপ্রায়! ঢের হয়েছে! রাগটা এবার কমাও। আবারও লিখবো চিঠি গাছের পাতায়, বৃষ্টির অক্ষরে, সবুজ প্রান্তরে। খোলা মাঠ দিগন্ত জুড়ে, ঘাসফুলেরা আবির মাখাবে, বুনোলতায় ছেয়ে যাবে বৃক্ষ। হেসে উঠে ফুলের দল পাপড়ি মেলে ধরবে। পাখির কূজনে ভরে উঠবে অরণ্য, আঙিনা, পথের দুপাশটায়। ঝুল বারান্দাটায় রৌদ্র ছায়ার লুকোচুরি খেলা হবে আবার। আবারও নিয়ে এসো মিঠে রোদ্দুরের আলস্য দুপুর।
তুমি যদি চাও আমিই হবো বৃক্ষ, মহীরুহ। আমার পাতায় পাতায় ছড়িয়ে দিবো মিঠে রোদ্দুর প্রাণ। প্রাণের বীজ ছড়িয়ে দিতে আহ্বান করবো পাখি আর পতঙ্গদের। সবুজে ছায়ায় মায়ায় পৃথিবী হয়ে উঠবে চিরতরুণ, চিরযৌবনা, চিরহরিৎ। তবে তা–ই হোক। আমিই হবো বৃক্ষ।