চাহিদা কম, বরফ বিক্রেতাও নেই আগের মত

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩০ এপ্রিল, ২০২১ at ৭:১২ পূর্বাহ্ণ

চন্দনাইশের দোহাজারীর বাসিন্দা মনির উদ্দিন। নগরীর লালদীঘি পাড় এলাকায় ভ্যানগাড়িতে তিনটি বড় বরফ খণ্ড নিয়ে বসেছেন। কিছুক্ষণ পর পর হাঁকডাক দিচ্ছেন- এই বরফ নেন, বরফ। পিস মাত্র ১০ টাকা। রমজান এলেই ইফতারিতে শরবতের চাহিদা বেড়ে যায়। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে পানি অথবা শরবতে বরফ মিশিয়ে ইফতার সারেন অনেকে। রমজান মৌসুমে মনির উদ্দিনের মতো অনেক মৌসুমী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বরফ বিক্রি করতে নেমে পড়েন।
জানতে চাইলে মনির উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, বিকেল ৪টা থেকেই বরফ বিক্রি শুরু করি। ইফতারের ঘণ্টাখানেক আগে থেকে বিক্রি বাড়ে। তবে এ বছর করোনাকালীন লকডাউনের কারণে বেচাবিক্রির অবস্থা খুবই খারাপ। গতবার করোনার মধ্যেও ভালোই বিক্রি হয়েছে। এছাড়া এখন গণপরিবহন চলাচল না করায় বাইরে মানুষের যাতায়াত কমে গেছে। যার ফলে এখন মাত্র দুই/তিনটি বড় বরফের টুকরো বিক্রি হয়। প্রতি টুকরোতে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়।
আন্দরকিল্লা মোড় এলাকায় বরফ বিক্রি করছিলেন কুমিল্লার গোলাম নবী। এক ক্রেতা ১০ টাকার বরফ চাইতেই হাতের কাছে থাকা ছোট হাতুড়ি দিয়ে টুকরো করে পলিথিনে বেঁধে দেন। এছাড়া ক্রেতার চাহিদা মতে, ৫ টাকার বরফও বিক্রি করেন বলে জানান তিনি। জানতে চাইলে গোলাম নবী বলেন, গত বছরের আগের বছর প্রতিদিন শুধুমাত্র বরফ বিক্রি করে এক হাজার টাকা আয় হতো। গত বছর সেটি অর্ধেকে নেমে আসে। এ বছরের অবস্থা তো আরো খারাপ। চারশ’ টাকা আয় করতে অনেক কষ্ট হয়ে যায়। মানুষের মধ্যে বরফ কেনার জন্য খুব একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। ফিশারিঘাট এলাকার বেশ কয়েকটি বরফ কল থেকে এসব বরফ কিনেন বলে জানান গোলাম নবী।
বরফ কিনতে আসা ক্রেতা আবদুল আলিম বলেন, কাপড়ের দোকানে চাকরি করি। প্রতিদিন এক সাথে পাঁচ/ছয়জন মিলে ইফতার করি। দোকানে তো আর ফ্রিজ নেই। তাই চাইলেও ঠাণ্ডা পানি খেতে পারি না। এজন্য বরফ কিনে পানি ও শরবতে বরফ মিশিয়ে ইফতার করি। ইফতারিতে ঠাণ্ডা পানি খেলে শরীরে প্রশান্তি আসে।
চেরাগি মোড়ের একটি ভ্যানে তিনটি বড় বরফের টুকরো বিক্রি করছিলেন মোহাম্মদ ইদ্রিস। পেশায় তিনি টেম্পুর হেল্পার। গাড়ি বন্ধ, তাই আপতকালীন বরফ বিক্রি করছেন। একেকটি বরফ তিনি বরফ কল থেকে ২৫০ টাকা কিনে এনে ছোট ছোট পিস করে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন। বিক্রি শুরু করেন বিকেল ৫টা থেকে। এ সময়ে অনেকে পানি ও শরবতে খাওয়ার জন্য বরফ কিনতে আসেন। জানতে চাইলে ইদ্রিস বলেন, এই প্রথম বরফ বিক্রি করছি। এক ঘণ্টায় ৪০০-৫০০ টাকা মতো আয় হয়, খুব একটা খারাপ বলা যায় না। আমি এক সময় টেম্পুর হেল্পার হিসেবে কাজ করতাম। পরিবহন বন্ধ, তাই বরফ বিক্রি করছি। গাড়ি চলাচল শুরু হলে আবার পুরনো পেশায় ফিরে যাব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসকালে বাংলা বিভাগে বিদায় বিকেলে ফের উপাচার্যের দায়িত্বে ড. শিরীণ
পরবর্তী নিবন্ধভারতে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ