চাল রপ্তানিতে শুল্ক আরোপের মেয়াদ বাড়াল ভারত

| শুক্রবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৮:২৩ পূর্বাহ্ণ

ভারত সরকার সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবার। ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় গত বুধবার এই নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস। খবর বিডিনিউজের।

দেশের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত বছরের অগাস্টে সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে ভারত সরকার। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই শুল্ক দিতে হবে বলে সে সময় জানানো হয়েছিল। এখন ওই আদেশের কার্যকারিতা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়ানো হল।

চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতেও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ভারত সরকার। বাংলাদেশসহ ছয় দেশে সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হলেও বাকি সব দেশের জন্য ওই নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ভোক্তা সুরক্ষা সচিব রোহিত কুমার সিং।

খরার কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ উৎপাদনকারক দেশ ভারত গত অক্টোবরে প্রথমে টনপ্রতি উচ্চ হারের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করে দেয় এবং পরে ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ওই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের বাজারে দাম বাড়তে থাকে। পাশাপাশি ভারতের পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল অনেক দেশে রান্নায় ব্যবহার করা এ পণ্যের সংকট দেখা দেয়।

বাংলাদেশ চাহিদা মেটাতে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করে প্রতিবছর। রোজার সময় দেশে পেঁয়াজের চাহিদা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে বেড়ে যায়। এ অবস্থায় রোজার আগে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ এবং এক লাখ টন চিনি যাতে বাংলাদেশ পায়, সেজন্য সাম্প্রতিক ভারত সফরে আলোচনা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এরপর গত রোববার এক বৈঠকে বাংলাদেশসহ ছয় দেশে সীমিত পরিসরে পেঁয়াজ বিক্রির অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীদের একটি কমিটি। কিন্তু তাতে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি উঠে যাচ্ছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে এবং পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম এক লাফে ৪০ শতাংশ বেড়ে যায়। ১৭ ফেব্রুয়ারি যেখানে প্রতি কুইন্টাল পেঁয়াজের দাম ছিল ১২৮০ রুপি, ১৯ ফেব্রুয়ারি তা উঠে যায় ১৮০০ রুপিতে।

এ পরিস্থিতিতে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে ভারতের ভোক্তা সুরক্ষা সচিব রোহিত কুমার সিং মঙ্গলবার বলেন, পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়নি এবং ৩১ মার্চের আগে তা তোলার কোনো সম্ভাবনাও নেই। দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রেখে দাম ভোক্তার নাগালে রাখার ওপরই সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে।

ইকোনমিক টাইমস লিখেছে, মহারাষ্ট্রে এবার রবি মৌসুমে পেঁয়াজের চাষ কম হয়েছে। ফলে উৎপাদনও হবে অন্য সময়ের তুলনায় কম। সে কারণে ৩১ মার্চের পরও পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখা হতে পারে।

বিশ্বের অনেক দেশের মত ভারতকেও গত দুই বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়তে হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনের আগে নিত্যপণ্যের দাম হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদী সরকারের মাথা ব্যথার কারণ। তবে ভারতের পরিসংখ্যান দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, নতুন বছরের শুরুতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতির হার হয়েছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ, যা ডিসেম্বরে ৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ ছিল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবইমেলায় দুয়োধ্বনি,ডিবির কাছে অভিযোগ হিরো আলমের
পরবর্তী নিবন্ধপতাকা উত্তোলন করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ব্যবসায়ীর মৃত্যু