চালের বাজারে আবার সিন্ডিকেটের কারসাজি

বাড়ছে দাম, মিল মালিকদের দুষছেন ব্যবসায়ীরা

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ at ৪:৩০ পূর্বাহ্ণ

অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে চালের বাজার। গত এক মাস ধরে চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তবে দুই সপ্তাহ যাবৎ দাম যেন আরো লাগামহীন হয়ে পড়েছে। সর্বশেষ তথ্য মতে, বর্তমানে সব ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলের মিল মালিকরা ধানের দাম বৃদ্ধি ও মজুদ কমে যাওয়া অজুহাত দেখিয়ে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সিন্ডিকেট কারসাজি করে প্রতি বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে চালের বাজার অস্থির করে তোলেন মিল মালিকরা। এছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। মূলত প্রশাসনের নজরদারির অভাবকে পুুঁজি করে ধানচালের দাম উঠানামা করার এসব আসাধু ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে নগরীর চাক্তাইর মিল মালিকরা বলছেন, গত দুই মাসে মণপ্রতি ধানের দাম বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত। যার প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। নগরীর চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে নাজিরশাইল, জিরাশাইল সিদ্ধ, মিনিকেট সিদ্ধ, বাসমতি সিদ্ধ, স্বর্ণা সিদ্ধ, বেতি, পাইজাম আতপ, মিনিকেট আতপ, কাটারিভোগ আতপ ও মোটা সিদ্ধ চালের দাম বস্তাপ্রতি সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। চালের আড়তদাররা জানান, গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ২৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬৫০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৪৫০ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ বস্তায় ৪০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং স্বর্ণা সিদ্ধ ৩০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ টাকায়। অপরদিকে মিনিকেট আতপ ২৫০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪৫০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭৫০ টাকা, বেতি আতপ ১৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩৫০ টাকায়। এছাড়া পাইজাম আতপ ২০০ টাকা বেড়ে গিয়ে ২ হাজার ৩৫০ টাকা, কাটারিভোগ আতপ ২৫০ টাকা বেড়ে গিয়ে ২ হাজার ৬৫০ টাকা এবং মোটা সিদ্ধ প্রতি বস্তায় ৩০০ টাকা বেড়ে গিয়ে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, উত্তরাঞ্চলের ধানচাল মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। অথচ প্রতিটি মিল মালিকের কাছে পর্যাপ্ত ধানের মজুদ আছে শুনেছি। ওরা ইচ্ছে করে অনেক মিল বন্ধ করে রেখে সেখানে ধান মজুদ করে রেখেছেন। মজুদদারীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের দৃশ্যমান অভিযানের অভাবের কারণে মিল মালিকরা সুযোগ নিয়ে থাকে। চট্টগ্রামের বাজারে কুষ্টিয়া, দিনাজপুর ও আশুগঞ্জ থেকে বেশি চাল আসে। তবে গত দুই সপ্তাহ যাবত চাল আসছে কম।

চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম দৈনিক আজাদীকে বলেন, চালের দাম সম্প্রতি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। গত ১০১৫ বছর ধরে এমন দাম বৃদ্ধি হয়নি। মূলত ধানের দাম বাড়ার কারণে চালের দাম বাড়ছে। গত দুই মাসে মণপ্রতি ধানের দাম বেড়েছে ৩০০ টাকা। সাধারণত প্রতি তিন মণ ধান থেকে এক মণ চাল পাওয়া যায়। ধানের দাম কমে গেলে আশা করি চালের দামও কমে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাহেদের যাবজ্জীবন
পরবর্তী নিবন্ধবিপ্লব উদ্যানের চুক্তি বহির্ভূত বসার স্থান ভেঙে দিয়েছে চসিক