আফ্রিকা মহাদেশের মোট জনসংখ্যার সম্পদের প্রায় অর্ধেকেরও বেশি সম্পদ মাত্র ৪ জন ব্যক্তির কাছে। ওই ৪ ধনকুবেরের সম্পদের পরিমাণ ৫৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। সমপ্রতি এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানিয়েছে দাতব্য সংস্থা অঙফাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সালে আফ্রিকায় কোনো বিলিয়নিয়ার ছিল না। বর্তমানে সেখানে বিলিয়নিয়ারের সংখ্যা ২৩। গত পাঁচ বছরে আফ্রিকান ধনকুবেরদের সম্পদ ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১১২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর মহাদেশটির অর্ধেকেরও বেশি সম্পদ মাত্র চার ধনী ব্যক্তির কাছে।
এছাড়া আফ্রিকার শীর্ষ ৫ শতাংশ ধনীর হাতে রয়েছে প্রায় ৪ ট্রিলিয়ন ডলার পরিমাণ সম্পদ, যা বাকি জনসংখ্যার মোট সম্পদের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। অক্সফামের তথ্য অনুসারে, আফ্রিকা মহাদেশে সরকারি নীতিগুলো দরিদ্রদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে এবং অতি ধনীদের আরও বেশি সম্পদ অর্জনের সুযোগ করে দিচ্ছে। বেশিরভাগ আফ্রিকান দেশ প্রগতিশীল করনীতি যথাযথভাবে প্রয়োগ করছে না। ফলে অতিধনীদের করের আওতায় আনা এবং বৈষম্য হ্রাসে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হচ্ছে না।
ক্রমবর্ধমান এই বৈষম্যের জন্য পশ্চাদগামী আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল নীতি, অবৈধ আর্থিক প্রবাহকে দায়ী করা হয়েছে। এজন্য বিদেশে অর্থ পাচারের সুযোগকে বিশেষ ভাবে দায়ী করেছে সংস্থাটি। মহাদেশটি প্রতি বছর আনুমানিক ৮৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার হারাচ্ছে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের কারণে। অক্সফাম বলছে, ২০২২ সাল থেকে আফ্রিকার প্রায় দশটির মধ্যে ৯টি দেশ কর, শ্রম অধিকার এবং ন্যূনতম মজুরি সংক্রান্ত নীতি থেকে সরে এসেছে যা বৈষম্য মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। আফ্রিকার সবচেয়ে ধনী কারা? : অক্সফামের প্রতিবেদনে আফ্রিকার শীর্ষ ধনী হিসেবে নাইজেরীয় বিলিয়নিয়ার আলিকো ডাংগোটের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁর সম্পদের পরিমাণ আনুমানিক ২৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। শীর্ষ চার ধনীর তালিকায় আরও রয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান রুপার্ট ও নিকি ওপেনহেইমার এবং মিশরের ধনকুবের নাসেফ সাওয়িরিস।
অঙফাম এই প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলেছে, চরম বৈষম্য গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে, দারিদ্র্য দূরীকরণে বাধা সৃষ্টি করে এবং এমনকি জলবায়ু সংকটকে আরও গভীর করে তোলে। ‘ধনীদের প্রভাব’ সরকারের দারিদ্র্যবান্ধব নীতি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে।