চারতলা বিদ্যালয় ভবনের কয়েকটি পিলারে ফাটল

নাসিরাবাদ কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিতে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী

| সোমবার , ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ

নাসিরাবাদ কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঝুঁকিতে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী

হাসান আকবর 

নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন নাসিরাবাদ কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারতলা ভবনের কয়েকটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের উদ্বেগের কথা লিখিতভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ কিনা তা যাচাই করার উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে ফাটলের কারণে সহস্রাধিক শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে অস্বস্তি বিরাজ করছে।

নগরের ব্যস্ত ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবস্থিত নাসিরাবাদ কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছিল। ক্রমে তা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। এলাকার শিক্ষার্থীর চাপ সামলাতে স্কুলটির কার্যক্রম ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি করতে হয়েছে। বর্তমানে প্রাক্‌প্রাথমিক শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাদান কার্যক্রম চলে। এতে এক হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী অধ্যয়ন করে। স্কুলটিতে ১৩ জন শিক্ষক রয়েছেন। এছাড়া ব্র্যাক থেকেও দুজন শিক্ষক সংযুক্তিতে এখানে শিক্ষকতা করেন।

চারতলা ভবনটিতে ১৬টি কক্ষ রয়েছে। এর ১৪টি ক্লাসরুম, একটি প্রধান শিক্ষকের এবং অপরটি শিক্ষকদের রুম। ভবনটির তৃতীয় তলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। পরে চতুর্থ তলা নির্মাণ করা হয়। সম্প্রতি ভবনটির নিচতলার পাশাপাশি ২টি পিলারে বড় ফাটল দেখা দেয়। প্রথম ফাটল দেখা দেয়ার কয়েকদিনের মধ্যে আরো ২/৩টি পিলারে ফাটল সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে একটি পিলারের ফাটল আতংক সৃষ্টি করছে।

বিষয় স্কুল কর্তৃপক্ষ থানা শিক্ষা কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানায়। পরে এলজিইডিকেও জানানো হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারহানা নাজনীন লিখিতভাবে থানা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানান। গত ৩১ জানুয়ারি এলজিইডির দুজন প্রকৌশলী বিদ্যালয় ভবনটি পরিদর্শন করেন। গতকাল থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হামিদ এবং সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তোরাব মোহাম্মদ হোসাইন ভবনটি পরিদর্শন করেন। থানা শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছেন। এতে এলজিইডির বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী দিয়ে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ কিনা তা যাচাই করে দেখার আবেদন জানানো হয়েছে।

নগরীর ষোলশহর দুই নম্বর গেটের কাছে সিঅ্যান্ডবি কলোনির ভিতরে অবস্থিত স্কুলটিতে গিয়ে দেখা গেছে, ফাটলগুলো স্পষ্ট। এতে শুধু শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা অভিভাবকরা নন, এলাকার মানুষজনও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

গতকাল একজন শিক্ষক জানান, স্কুলে যেতে ভয় করে। পিলারের ফাটলগুলো চোখে পড়ে। শুধু নিজের জন্য নয়, ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর জন্যও চিন্তা লাগে। ১৯৮৭ সালে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। অথচ মাত্র ৩৬ বছরের মধ্যে পিলারে ফাটল দেখা দেয়া দুর্ভাগ্যজনক। কাজের মান যথাযথ না হওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা আকিল আহমেদ।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারহানা নাজনীন বলেন, পিলারে ফাটল দেখা দেয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। উনাদের জানানোর সাথে সাথে থানা শিক্ষা অফিসার এবং সহকারী শিক্ষা অফিসার তাৎক্ষণিকভাবে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এলজিইডি থেকেও প্রকৌশলীরা এসেছেন। নিশ্চয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান তারেক বলেন, ফাটল দেখা দেয়ার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর ব্যবস্থা করেছি। বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।

এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান তুহিন বলেন, পিলারগুলো দেখেছি। এগুলো প্লাস্টারের ফাটল নয়, পিলারের মূলে ফাটল। আবার নিচতলায় ফাটল থাকলেও উপরের তলায় নেই। পাশাপাশি চারটি পিলারই ফেটে গেছে। ছবি তুলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়েছি। সিনিয়র প্রকৌশলীদের নিয়ে আজ আবার যাব।

তিনি বলেন, এই ফাটল অবহেলার করার সুযোগ নেই। আমরা আজ আবার গিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করব। ভবনটি ৮৭ সালে নির্মাণ করা এবং ওই সময় ইটের চিপস দিয়ে ঢালাই দেয়া হয়েছিল। পুরো বিষয়টি ভালোভাবে পরীক্ষা করার আগে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএলপিজির দাম আরও বাড়ল
পরবর্তী নিবন্ধমিয়ানমারের ৫৮ সীমান্তরক্ষী পালিয়ে এল বাংলাদেশে