নগরের চান্দগাঁও থানা হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় দুই এএসআইকে (সহকারী উপ–পরিদর্শক) চান্দগাঁও থানা থেকে প্রত্যাহার করে দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। সিএমপির দাবি তদন্তের স্বার্থেই তাদের সরানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ মাসুদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানা যায়। দুই সহকারী উপ–পরিদর্শক হলেন মো. ইউসুফ আলী এবং এটিএম সোহেল রানা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির অতিরিক্ত উপ–পুলিশ কমিশনার (পিআর) স্পিনা রানী প্রামাণিক বলেন, পুলিশ হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত যাতে কোনোভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়; সেজন্যই তদন্তের স্বার্থে দুই এএসআইকে সেখান থেকে সরিয়ে দামপাড়াতে সংযুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর রাতে নগরের চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকার বাসা থেকে দুদকের অবসরপ্রাপ্ত উপ–পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে (৬৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
দুদক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহর দুই ছেলে আসিফ ও নাফিস দাবি করেন পুলিশ হেফাজতে পরিকল্পিতভাবে তার নিরীহ বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল চমেক হাসপাতালে পরিবারের সদস্যরা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, এটি একটি হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচার চাই।
নিহতের ছেলে ক্যাপ্টেন নাফিস শহীদ বলেন, চান্দগাঁও বাসায় ফেরার পথে রাত সাড়ে ১০টায় দুই পুলিশ সদস্য কোনো মামলার ওয়ারেন্ট ছাড়াই বাবাকে ধরে নিয়ে যায়। উনার ন্যূনতম সম্মানটা পুলিশ রাখেনি। খুনের মামলার আসামির মতো করে টেনে–হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নাফিস শহীদ বলেন, আমরা ওয়ারেন্ট দেখতে চাইলে তারা দেখাতে পারেনি। পুলিশ যখন বাবাকে বাসা থেকে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন আমার চাচারাও পেছনে পেছনে গিয়েছেন। চাচারা যখন থানায় যান, তখন থানার কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোনো থানায় কলাপসিবল গেট বন্ধ রাখে তা কখনো শুনিনি। কিন্তু এখানে গেট বন্ধ রাখা ছিল। আমাদের কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। বাবা হার্টের রোগী হওয়ায় উনাকে নিয়মিত ইনহেলার ও মেডিসিন নিতে হয়। ভেতরে উনি যখন অসুস্থ অনুভব করছেন; তখন আমরা বাবাকে ওষুধের ডোজ দিতে চাইলে পুলিশ নিতে দেয়নি। পরে থানার ভেতরে তাঁর মৃত্যু হয়। বাবা যখন মারা গেছেন, তখন অসুস্থ বলে পুলিশ বাবাকে হাসপাতালে নেয়।