নগরে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের যৌথ মিছিলে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে চান্দগাঁও থানার আরাকান সড়কের বালতি কোম্পানির মোড়ে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ১০ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর চারজনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হচ্ছেন চাঁন্দগাও থানা যুবদলের আহ্বায়ক গুলজার হোসেন, নগর ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি সাজিদ হাসান রনি, যুগ্ম সম্পাদক মো. শহিদুজ্জামান, যুবদলনেতা মো. আজম ও নূর মোহাম্মদ। এদিকে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদসহ সিনিয়র নেতারা।
নগর বিএনপির সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলী বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিতে ঢাকাসহ সারাদেশে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল সারাদেশে থানায় থানায় কেন্দ্রঘোষিত প্রতিবাদ মিছিল কর্মসূচি পালন করছিল। এর অংশ হিসাবে চাঁন্দগাও থানা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল বহদ্দারহাট মোড় থেকে মিছিল বের করে। আরাকান সড়কের বালতী কোম্পানি মোড়ে গেলে আওয়ামীলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অতর্কিত আক্রমণ করে আমাদের কর্মীদের আহত করেছে।’
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমি অনেকের কাছে মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু বহদ্দারহাট মোড়ে আমাদের প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। কেউ এ ধরনের কোনো ঘটনার বিষয়ে জানে না। তাহলে কখন হামলা হল, কিভাবে আহত হল- এটা আমরা জানি না।
পাঁচলাইশ থানার ওসি আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, হরতাল সমর্থকরা ভাঙচুর করছে এমন খবর পেয়ে আমরা গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমরা দেখি একজনকে স্থানীয় লোকজন ধরে রেখেছে। তাকে ভাঙচুরকারী বলে অভিযুক্ত করেছেন স্থানীয়রা। কিন্তু আমরা এর প্রমাণ না পেয়ে তাকে ছেড়ে দিই। বিএনপির কোনো মিছিলে হামলার বিষয় আমাদের কেউ বলেনি।
বিএনপির প্রতিবাদ : শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করে নেতাকর্মীদের আহত করা হয়েছে উল্লেখ করে ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, বেগম রোজী কবির, এস এম ফজলুল হক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান, নগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দিপ্ত ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু, নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম ও সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপরে হামলাকারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে দেশবাসী যখন স্বাধীনতা দিবস পালন করছে তখন অবৈধ সরকার তার পুলিশ বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা রাজপথ রক্তাক্ত করেছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজের পরে একটি সংগঠনের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বিনা উসকানিতে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় শত শত সাধারণ মুসল্লিদের মারাত্মকভাবে গুলিবিদ্ধ ও আহত করেছে। এর প্রতিবাদে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপরে পুলিশের নৃশংস হামলা ও নির্বিচারে গুলি চালানোয় কমপক্ষে ৭ জন নিহত ও অসংখ্য আহত হয়েছে। এই হতাহতের ঘটনার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বহদ্দারহাটে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মিছিল সমাবেশ ও সভা অনুষ্ঠান করা আমাদের সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার। এই জঘন্য হামলার মধ্য দিয়ে সরকার তাদের ফ্যাসিবাদী খুন, গুম নির্যাতনের মাধ্যমে বিরোধী দল এবং ভিন্নমতকে দমন করে চলেছে। সকল রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে কর্তৃতৃবাদী শাসন চিরস্থায়ী করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রকান্তরে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। মহান স্বাধীনতা দিবসে ৫০ বছর পূরণের এই সময়ে এই হামলার ঘটনা জাতির জীবনে এক কলংকজনক অধ্যায়।