চাক্তাই-রাজাখালী খালের মোহনার মাছ বাজারকে সরে যেতে হবে

জায়গাটি নদী হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশ হাইকোর্টের

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩০ মে, ২০২৪ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী নদীর জায়গায় জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতি স্থাপিত মাছ বাজার এলাকাটি নদীর জায়গা হিসাবে সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে দেওয়া রায়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি এ কে এম জাহিদ সরওয়ারের আদালত এই আদেশ প্রদান করেন।

আদেশে আদালত এও বলেছেন, উক্ত জায়গার মালিকানা নিয়ে পোর্ট অথরিটি নিম্ন আদালতে যে মামলা করেছেন সেই জায়গার মালিকানা সংক্রান্ত বিষয় আইন অনুযায়ী উক্ত আদালত সিদ্ধান্ত নিবে। রিটে পক্ষভুক্ত বিবাদী এইচআরপিবির (হিউম্যান রাইট এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ) অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, যেহেতু আদালত উক্ত জায়গাটি নদী হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছেন তাই জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে উক্ত জায়গা থেকে সরে যেতে হবে। রিটকারীর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট সারাওয়ার আহমেদ ও সাঈদ আহমেদ রাজা, পোর্ট অথরিটির পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও সরকারের পক্ষে ছিলেন ডিআইজি বিপুল বাগমির।

আদালতসূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কর্ণফুলী নদীর চাক্তাইরাজাখালী খালের মোহনার জায়গা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরিকারী ৪৭ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে উচ্ছেদ নোটিশকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা ৭২০/২০২১ দায়ের করেন জাতীয় মৎসজীবী সমিতি। আদালত উক্ত রিট মামলায় রুল জারি করে স্থিতিবস্থার আদেশ দেন। পরে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের আদালত জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির দায়েরকৃত রিটটি ২০২৩ সালের মার্চে খারিজ করে দেয়। এরপর জাতীয় মৎসজীবী সমিতি হাইকোর্টে আরেকটি রিট পিটিশন ২৪০২/২০২৩ দায়ের করে এবং স্থিতিবস্থার আদেশ অর্জন করেন। বিষয়টি এইচআরপিবি’র নজরে আসলে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রিট মামলায় পক্ষ হওয়ার আবেদন করেন। যা আদালত মঞ্জুর করেন।

আদালতসূত্র আরো জানায়, গত মার্চ থেকে দীর্ঘ দুই মাস মামলাটি একাধিকবার বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি এ কে এম জাহিদ সরওয়ারের আদালতে শুনানি হয়। শুনানিতে এইচআরপিবি প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রিট কারি ও জেলা প্রশাসনের মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়ের ব্যাপারে এইচআরপিবি’র কোন বক্তব্য নাই বলে জানান। তবে যে জায়গায় রিট পিটিশনার ফিশারী ঘাট তৈরি করেছেন সেই জায়গাটি কর্ণফুলী নদীর জায়গা এবং এইচআরপিবি জনস্বার্থ মামলায় ইতোপূর্বে হাইকোর্ট ২০১৬ সালে রায় দিয়ে নদীর জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন এবং হাইকোর্টের নির্দেশে জরিপে ৮৬৫১ দাগটি নদী হিসাবে চিহ্নিত। কোন এক সময় নদীর জায়গা ভরাট করে চট্টগ্রাম পোর্ট অথরিটি ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের জন্য জাতীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে নদীর জায়গাটি লিজ প্রদান করেন। এ বিষয়ে শুনানিতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, এই ধরনের লিজ সম্পূর্ণ অবৈধ কারণ আপিল বিভাগের রায়ে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে ব্যবসায়িক কারণে নদীর জায়গা লিজ দেয়া যাবে না। নদীর জায়গা নদী হিসাবে সংরক্ষণের আদেশও প্রার্থনা করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়ির দুই উপজেলায় চেয়ারম্যান হলেন যারা