চাক্তাইকে দূষণমুক্ত দেখতে চাই

নুসরাত সুলতানা, প্রাবন্ধিক | বুধবার , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

প্রাচীনকাল থেকেই অনেক পাহাড়ি ছড়া, পাহাড়ি নদী, বহু খাল আমাদের এই শহরে জালের মতো ছড়ি আছে। বলা যায় এই নদী, নালা, খাল, ছড়াগুলোই চট্টগ্রাম নামক নগর শরীরের শিরা উপশিরা। একটা সময় অর্ধশতাধিক খালছড়ার হিসেব থাকলেও বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীতে খালের সংখ্যা প্রায় ৩৭টি। এর মাঝে চাক্তাই খালসহ ১৬টি প্রধান খালের দৈর্ঘ্য ১৫০ কিলোমিটারের মতো। বড় খালগুলো থেকে অনেকগুলো শাখা, উপশাখা বের হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট খালের দৈর্ঘ্য ১৮২.২৫ কিলোমিটার।

চট্টগ্রাম শহরের প্রধানতম খাল হলো চাক্তাই। একটা সময় নদীর জোয়ার ভাটার সাথে তাল মিলিয়ে ব্যবসায়ীরা শহরের অন্যতম পাইকারি বাজার চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, কোরবানীগঞ্জ, আছাদগঞ্জ থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল চাক্তাই খালের উপর দিয়েই প্রতিদিন শত শত নৌযানে করে উত্তর চট্টগ্রাম ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে আনা নেওয়া করতো। নৌকা কিংবা সাম্পান বোঝাই করে আনোয়ারা, রাউজান, বোয়ালখালীতে মালামাল পৌঁছানো হতো। কয়েক বছর আগেও মোহনা থেকে খাতুনগঞ্জের ইসহাকের পুল এলাকা পর্যন্ত জিনিসপত্র নিয়ে সব সময় নৌকা কিংবা সাম্পান যেতো। চাক্তাই খালের দুপাশে দেশের অন্যতম ভোগ্য পণ্যের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই ও খাতুনগঞ্জ থেকে ২৫ থেকে ৩০ বছর আগেও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি করা ভোগ্য পণ্য। এই খাল দিয়ে ৫০ টিরও বেশি নৌযান ব্যবহার করে কর্ণফুলী নদী হয়ে সারাদেশে পাঠানো হতো। চাক্তাই খাল থেকে নৌযানের মাধ্যমে কর্ণফুলী নদী ও চানখালি খাল হয়ে সাঙ্গু নদীর মাধ্যমে বান্দরবানের থানচি ও রুমা উপজেলা পর্যন্ত পণ্য নেওয়া হতো অথচ এখন খালের অবস্থা দেখলে ওইসব দিনের কথা কেউ বিশ্বাস করতেই চাইবে না। কথাগুলো যেনো এখন কেবলই স্মৃতি। এখন জোয়ারের সময়ও নৌকা, সাম্পান চলাচল করতে পারে না। চাক্তাই খাল ভরাট হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় নিয়মিত। নৌযান চলাচলও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। এই চাক্তাই খালকেই বর্তমানে ‘চট্টগ্রামের দুঃখ’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ভরাটের কারণে খালটি নাব্ব্যতা হারিয়ে মৃত প্রায় অবস্থায় কোনো মতে অতীতের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছে। ময়লাআবর্জনা ফেলার কারণে খালের দুপাশে ভরাট হয়ে প্রশস্ততা কমে গেছে। শত বছরের ঐতিহ্য এই খালে যুগে যুগে প্রবাহিত হয়েছে অনেক পানি। এই খালকে ঘিরে করা হয়েছে অনেক পরিকল্পনা। কিছু কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলেও এখনো চাক্তাই খাল চট্টগ্রামের দুঃখ হয়েই রয়ে গেলো।

বহদ্দারহাট মোড় থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে খালটি নগরের চাক্তাই এলাকায় গিয়ে কর্ণফুলী নদীতে মিশেছে। এই চাক্তাই খাল নিয়মিত খনন না করার কারণে এবং বিভিন্ন অংশে দখলদারদের দৌরাত্ম্যে আর আবর্জনা ফেলার কারণে ভরাট হয়ে গেছে। খাল সংকুচিত হয়ে পড়ায় অনেক জায়গায় পানির প্রবাহ কমে গেছে। দূষণে খালের পানির রং হয়েছে কালো। খালের পানিতে ভাসে আবর্জনা, বিষাক্ত পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতল। খালের ভেতরে জমে থাকে মাটির স্তূপ। খালের তলা মাটিতে ভরে যাওয়ায় প্রতিবছর বর্ষায় পানিতে তলিয়ে যায় আশপাশের এলাকা। পত্রিকা সূত্রে জানা যায় ২০০৩/০৪ সালে সাড়ে ৯ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত গভীরতা রেখে চাক্তাই খালের অনেক অংশে তলদেশ পাকা করা হয়। কারণ, ছোট নৌযান চলার জন্য কমপক্ষে ১০ ফুট গভীরতা দরকার। কিন্তু দুইতিন বছর পার হতেই পাহাড়ি বালি, মাটি আর আবর্জনা জমে খালটি আবার ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে খালের গভীরতা হয়ে যায় ৪ থেকে ৫ ফুট। চাক্তাই খালের প্রস্থ কোথাও ৭০ ফুট তো কোথাও ২০ ফুট। প্রস্থ যেখানে কম সেখানে ময়লা আবর্জনার পাশাপাশি মাটির স্তূপও জমে থাকে বেশি। কোনো কোনো এলাকায় খালের দুপাশে পাকা সীমানা দেয়াল আছে। আবার অনেক জায়গায় কোনো সীমানা দেয়াল নেই। সীমানা দেয়া ছাড়া অংশে দখলের পরিমাণ বেশি। বদ্দারহাট মোড় থেকে বারইপাড়া পর্যন্ত খালের পাড় ধরে হাঁটলে স্পষ্ট দেখা যাবে খালের ভিতর অনেক জায়গায় মাটির স্তূপ জমে থাকে। পড়ে থাকে ময়লা আবর্জনা। দুপাশে মানুষের ঘরবাড়ি। দূষণের পরিমান বেশি হওয়ায় প্রতিবছর খাল উপচে বারইপাড়া ও জঙ্গি শাহ মাজার এলাকায় পানি ঢুকে। জঙ্গি শাহ মাজার থেকে কাপাসগোলার দিকে গেলে দেখা যাবে খালের প্রস্থ একেক জায়গায় একেক রকম। প্রতিবছর বৃষ্টিতে বেশ কয়েকবার কাপাসগোলা এলাকায় খাল উপচে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে যায়। চকবাজার ধুনিরপুল এলাকায় খালের অবস্থা ভয়াবহ। চোখে পড়ে, রাস্তার পাশের ডাস্টবিন থেকেই গড়িয়ে পড়ে ময়লা আবর্জনার বিশাল স্তূপ জমা হতে থাকে খালের ভেতর। গত কয়েক বছরে চকবাজারের দোকানপাট উঁচু করা হলেও নিস্তার নেই। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায়। ডি.সি রোড, দেওয়ান বাজার হয়ে মাস্টারপুল পর্যন্ত এলাকায় খালের পাড় ধরে একনাগারে হাঁটার কোনো সুযোগ নেই। মাস্টারপুল থেকে খালের পাড় ধরে বউ বাজারের দিকে গেলে দেখা যাবে খাল ওদিকে অনেকটাই সরু হয়ে গেছে। প্রতিবছর খাল খনন কিংবা পরিষ্কার করা হলেও বর্ষায় পানি উঠবেই। মিয়াখান নগর এলাকায় লোকজন সব সময় ময়লা ফেলেন সরু খালের ভেতরে। ভাঙাপুল এলাকায় চাক্তাই খালকে দেখে বুঝা যাবে খালের ভেতরে মাটি কিংবা ময়লা আবর্জনা নেই। এদিকে পানির বেশ ভালো প্রবাহ দেখা যায়। মনে হবে চাক্তাই খালে অনেক পানি। নৌযান চলাচলের উপযোগী। ওইদিকে খাল বেশ বড়, বেশ চওড়া। আবার ভাঙাপুল থেকে খালের পাড় ধরে মধ্যম চাক্তাই এলাকায় গেলে দেখা যায় বিভিন্ন দোকান ও বাড়ির বর্ধিত অংশ খালের ভেতরেই। তবে নতুন চাক্তাই এলাকায় খাল অনেক চওড়া। ওদিকে পণ্যবাহী নৌযান নোঙর করে রাখা যায়।

চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাকারী খালছড়াগুলো দখলের কারণে অল্প বৃষ্টিতেই শহরের বড় অংশ জুড়ে মারাত্মক জলাবদ্ধতা হয়। বাকলিয়া, চকবাজার, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, ষোলশহর এলাকাগুলো অল্প বৃষ্টিতেও পানিতে তলিয়ে যায়। চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আছাদগঞ্জ, রাজাখালি এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে নিত্য পণ্য ভর্তি শত শত দোকানপাট, গুদাম ও আড়ত পানিতে তলিয়ে গিয়ে কোটি কোটি টাকার মালামাল বিনষ্ট হয়। শুধুমাত্র স্লুইস গেট দিয়ে জলাবদ্ধতা সমস্যা পুরোপুরি নিরসন কখনো সম্ভব হবে না। তবে আশার কথা হলো চাক্তাই খালের কর্ণফুলী মোহনায় নির্মিত স্লুইস গেটের সুফল পেতে শুরু করেছে জনগণ। সামপ্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে ভারী বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতা ও জোয়ারের পানি থেকে রক্ষা পেয়েছে ব্যবসায়ীদের দোকান, গুদাম। অথচ স্লুইচ গেট নির্মাণের আগে শুষ্ক মৌসুমেও চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ শুষ্ক মৌসুমে জোয়ারের পানিতেও তলিয়ে যেতো।

চট্টগ্রাম নগরের অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা‘- যা নিরসনে কাজ চলছে বহু বছর ধরে। তারপরেও পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি ঘটেছে এমনটা বলা যায় না। বিভিন্ন পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায়, শহর থেকে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পলিথিন সহ বিভিন্ন রকমের ময়লা আবর্জনা সদরঘাট থেকে বাকলিয়া চর পর্যন্ত ৮টি খাল দিয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে পড়ছে। এই বর্জ্যই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট বড় ধরনের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫ টন আবর্জনা অপসারণের মাধ্যমে কর্ণফুলী নদীতে বহুল প্রত্যাশার ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। ২০১১ সালে মালয়েশিয়ার মেরিটাইম এন্ড ড্রেজিং কর্পোরেশন নামের কোম্পানির মাধ্যমে ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্প শুরু করা হলেও কাজটি মাঝপথে থেমে যায়। কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর ডিপিএম পদ্ধতিতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে চীনা কোম্পানি চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডকে দিয়ে আবারো নতুন করে ড্রেজিং কাজ শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ‘সদরঘাট টু বাকলিয়ার চর ড্রেজিং’ নামের এই প্রকল্পের আওতায় কোটি কোটি টাকা খরচ করে নদী থেকে প্রচুর পরিমাণ পলি উত্তোলন করা হয়। এবং প্রকল্পের আওতায় সদরঘাট থেকে বাকলিয়ার চর পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২৫০ মিটার চওড়া এলাকায় ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ড্রেজিং এর সুফল ধরে রাখার জন্য বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চালানো হচ্ছে। কিন্তু এই রক্ষণাবেক্ষণ কাজ চালাতে গিয়েও নতুন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষকে। প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ বর্জ্য নদীতে গিয়ে পড়ায় চাক্তাই খালের মুখ নতুন করে ভরাট হতে শুরু করে। অতি দ্রুত মাত্রায় কয়েকদিনেই খালের মুখ ভরাট হয়ে যায়। খালের মুখ পরিষ্কার রাখার জন্য ড্রেজার প্রতিদিন যে পরিমাণ বর্জ্য সরায় তার থেকে বহু বেশি বর্জ্য খাল হয়ে নদীতে গিয়ে পড়ে।

খাল ও নালাকে সচল রাখতে হলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিক নিয়ম আনতে হবে। অপচনশীল বর্জ্য যেমন পলিথিন, প্লাস্টিক যাতে কোনোভাবেই খালে না যায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো ধরনের ময়লা যাতে নালা কিংবা খালে ফেলা না হয় সেজন্যে জনগণকে সচেতন করতে হবে। নালা ও খাল পরিষ্কার রাখার কাজ সারা বছরই অব্যাহত রাখতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি খালের পাড়ে সড়ক ও ফুটপাত নির্মাণ করলে খাল পুনরায় দখলের আশঙ্কামুক্ত থাকবে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যেমন নদী, খাল এবং এর আশপাশের এলাকার সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার করা হয়; ওয়াটার বোট, খালের পাড়ে হাঁটার এবং বসার ব্যবস্থা করা হয় আমাদের দেশের খালের পাড়েও তেমন ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা ঘটেছে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে। ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে সরকার পতনের এক দফা দাবি’ সাধারণ শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জের ধরেই ০৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলের পতন ঘটে এ ঘটনার মধ্য দিয়ে। এরপর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এই প্রজন্মকে একটা দূষণ ছাড়া নদী দেখাতে চাই’। তিনি বলেন, ‘যারা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন করেছে তারা কখনো দূষণমুক্ত নদী দেখেনি। দেশেতো অনেক নদী, সব নদীকেই সুরক্ষা দিতে হবে। সৃষ্টি করতে হবে দৃষ্টান্ত। তাঁর মতে সবচেয়ে দূষিত নদী বা খাল দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে নিয়মিত মনিটরিং করতে হবে। এলাকাবাসীকে সম্পৃক্ত করতে হবে, কমিউনিটি বেইজ গ্রুপ করে ছাত্রদেরকে সম্পৃক্ত করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে সংযুক্ত থেকে দায়িত্ব নিতে হবে। সর্বোপরি অপকৌশলগুলো মনিটরিং করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে

সারাদেশে আটটি বিভাগে যদি আটটি নদী কিংবা খাল দূষণমুক্ত করা হয় তাহলে আমার মনে হয় প্রথমে চট্টগ্রামের দুঃখ খ্যাত ‘চাক্তাই’ খালকে দূষণমুক্ত করা ভীষণ জরুরি। আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে পানির প্রবাহমান ধারা সহ একটি পরিচ্ছন্ন খাল উপহার দিতে চাই।

লেখক : প্রাবন্ধিক

পূর্ববর্তী নিবন্ধহ্রদকেন্দ্রিক রাঙামাটির পর্যটন
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম : অনন্য যুগে যুগে